পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ হলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই উত্তরবঙ্গেও চালু হতে পারে ‘ব্যাঘ্র পর্যটন’। — ফাইল ছবি।
উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় বাঘের গতিবিধি ধরা পড়েছে। এ বার সেখানে তাদের বাসস্থান গড়ে তোলা যায় কি না, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছে রাজ্য। পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ হলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই উত্তরবঙ্গেও চালু হতে পারে ‘ব্যাঘ্র পর্যটন’— এমন ইঙ্গিতই দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্য বনপাল সৌমিত্র দাশগুপ্ত। এ নিয়ে ‘ন্যাশনাল টাইগার কনজ়ারভেশন অথরিটি’ এবং ‘গ্লোবাল টাইগার ফোরাম’-এর সঙ্গে বৈঠক ছিল রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপালের। তার পরেই এ কথা জানিয়েছেন তিনি।
আলিপুরদুয়ারের রাজাভাতখাওয়ায় মঙ্গলবার থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত ম্যারাথন বৈঠক চলে। বৈঠকে রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপালের সঙ্গে ‘ন্যাশনাল টাইগার কনজ়ারভেশন অথরিটি’র পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত ডিজি এসপি যাদব, ‘গ্লোবাল টাইগার ফোরাম’-এর সেক্রেটারি জেনারেল রাজেশ গোপাল।
গত কয়েক বছর ধরে উত্তরবঙ্গের পাহাড়-সহ সমতলের বিভিন্ন অভয়ারণ্যের ট্র্যাপ ক্যামেরায় একের পর এক রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের ছবি ধরা পড়ছে৷ তবে বাঘের অস্তিত্বের প্রমাণ মিললেও তারা বসবাস করছে না বলেই মনে করছে বন দফতর। এ বার সেই বিষয়কে মাথায় রেখেই এই বৈঠক৷
রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল জানিয়েছেন, বক্সায় ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। তার পাশাপাশি বাঘের আরও বাসস্থান এবং বিচরণক্ষেত্র গড়ে তোলা-সহ একাধিক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে ওই বৈঠকে। মহানন্দা অভয়ারণ্য ও নেওড়াভ্যালি অভয়ারণেও হতে পারে ব্যাঘ্র পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার কাজ।
বন দফতর সূত্রে খবর, সব কাজ ঠিকঠাক হলে ভারত সরকারের অনুমতি নি অসম বা জিম করবেট ন্যাশনাল পার্ক থেকে একাধিক রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার নিয়ে আসা হবে বক্সা-সহ অন্যান্য অভয়ারণ্যে। তাদের উপর চালানো হবে নজরদারি। তাতে সাফল্য মিললেই ধীরে ধীরে বাড়ানো হবে বাঘের সংখ্যা। গড়ে তোলা হবে প্রজনন কেন্দ্র। মূলত শান্ত পরিবেশই পছন্দ রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের। বন দফতরের বিভিন্ন বিভাগের কাছে ফিল্ড রিপোর্ট তলব করা হবে। কোন কোন অভয়ারণ্য কেমন পরিস্থিতিতে রয়েছে, তা দেখা হবে। বাঘের উপযুক্ত বাসস্থান তৈরির জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বক্সাতেও রাজ্য ও কেন্দ্রের সহযোগিতায় পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে খবর।
রাজ্যের মুখ্য বনপাল বলেন, ‘‘রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের বাসস্থান বা তার উপযুক্ত স্থান তৈরির জন্য বৈঠকে যা আলোচনা বা পরিকল্পনা হয়েছে, তা যদি আমরা মেনে চলি, তা হলে আগামী ছ’মাসের মধ্যে তার ফল আমরা পাব। যদি বছরখানেকের মধ্যে কাজটা আমরা সম্পন্ন করতে পারি, তা হলে উত্তরবঙ্গে ব্যাঘ্র পর্যটন এবং বাঘ সংক্রান্ত পদক্ষেপের আমূল পরিবর্তন হবে। বাংলা একটা নতুন অধ্যায় দেখতে পাবে। আমাদের কাজটাকে সঠিক ভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তা হলে উত্তরবঙ্গে ব্যাঘ্র পর্যটনে বিশাল পরিবর্তন আসবে। যত রকমের সাহায্যের প্রয়োজন তা ন্যাশনাল টাইগার কনজ়ারভেশন অথরিটি এবং গ্লোবাল টাইগার ফোরাম আমাদের করবে।’’