প্রতীকী ছবি।
মেডিসিন বিভাগে করিডরের মেঝেতে জ্বরের রোগী ভর্তি ছিল মঙ্গলবারও। বুধবার স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে আসছেন বলে রোগীদের করিডর থেকে তুলে ওয়ার্ডে ঠাসাঠাসি করে রাখার ব্যবস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। ডেঙ্গি, জ্বর নিয়ে মেডিক্যালে দু’শোর মতো রোগী ভর্তি রয়েছেন।
অনেককে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল থেকে রেফার হয়ে এসেছেন। ওয়ার্ডে ৪৮টি করে শয্যা। জ্বর এবং অন্য রোগী মিলিয়ে রয়েছেন ১৫০-১৭০ জন করে। তাতে করিডরের মেঝেতে ভরে উঠেছিল রোগী। এদিন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্যর পরিদর্শন উপলক্ষে করিডর সাফ সুতরো। কোনও রোগী সেখানে নেই। মঙ্গলবার করিডরে রোগী থাকার কথা স্বীকার করে নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, তেমন কোনও ব্যাপার নেই। রোগী কমে আসাতে হয়তো করিডরে রোগী নেই। তবে এ দিন মেডিসিন বিভাগে পরিদশর্নে যাননি স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে অনুমোদিত শয্যা ছয়শো। চিকিৎসক-নার্স-কর্মী রয়েছে সেই মতো। অথচ রোগী থাকেন গড়ে ১২০০। তাই সমস্যা রয়েইছে। তার উপর নিউরো মেডিসিন, নিউরো সার্জেন, কার্ডিও সার্জেন, নেফ্রলজির বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাবে ওই বিভাগগুলোতে পরিষেবা কার্যত বন্ধ। সিটি স্ক্যান তিন বছর ধরে নষ্ট হয়ে থাকায় শিলিগুড়ি হাসপাতালে গাড়ি ভাড়া করে সিটি স্ক্যান করাতে যেতে হয় রোগীদের। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকদের একাংশ বেশিরভাগ সময় কলকাতায় বসে থাকেন বলে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। অভিযোগ, তারা সপ্তাহে ২-৩ দিনের বেশি থাকেন না। এ সব সমস্যা দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিসবাবু।
বুধবার কয়েক ঘন্টার সফরে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এসে প্রসূতি বিভাগ, ব্লাড ব্যাঙ্ক, জরুরি বিভাগ পরিদর্শন করেন তিনি। কলেজ কাউন্সিলিংয়ের বৈঠকে সমস্যার বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করে সমাধানের ব্যবস্থা নিতে বলেন। হাসপাতালের সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠান শুরু হবে ১৮ নভেম্বর।
গোল্ডেন ‘জুবলি অডিটরিয়াম’-এর কাজের অগ্রগতি দেখেন। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের সুবর্ণজয়ন্তীর উদ্বোধনে থাকার ইচ্ছের প্রকাশ করেছেন। ১৮ নভেম্বর উদ্বোধনে তাই তাঁর আসার সম্ভবনা রয়েছে। আয়োজনের বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে।’’
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা জানান, যে সমস্ত চিকিৎসকরা থাকছেন না বলে অভিযোগ তাঁদের সঙ্গে কথা হয়েছে। নিয়ম মাফিক তাঁদের থাকতে বলা হয়েছে। তা হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ দিন পরিদশর্নের সময় করিডরের জরাজীর্ণ পরিস্থিতি দেখে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। করিডরের সংস্কার অগ্রাধিকার দিয়ে করা নির্দেশ দেন। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের অধ্যক্ষ সমীর ঘোষ রায় জানান, একাধিক বার টেন্ডার করা হলেও ঠিকাদাররা সাড়া দেয়নি। তাই সমস্যা হচ্ছে।
পরিকাঠামোর ঘাটতি থাকায় ১৫০ আসনের জায়গায় এ বছর ৫০ টি আসনে অনুমোদন খাজির করেছে মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া।
দেবাশিসবাবু জানান, এমসিআইয়ের পরামর্শ মতো পরিকাঠামো ঠিক করে ফের আবেদন করা হবে। আগামী বছর যাতে ১৫০ আসনের অনুমোদন মেলে চেষ্টা হচ্ছে।