আলু চাষে যা ক্ষতি হওয়ার তা তো হয়েইছে। এ বার নোট বাতিলের ধাক্কায় শসা চাষেও ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে চলেছেন চাষিরা।
ফালাকাটার জয়চাঁদপুর, ক্ষীরেরকোট গ্রামে বিঘার পর বিঘা জমিতে শসা একটু বড় হতে না হতেই গাছেই কুঁকড়ে গিয়ে ফেটে পচে যাচ্ছে। হলুদ হয়ে মরে যাচ্ছে গাছ। ফলে মাথায় হাত চাষিদের। সব্জি বলয় হিসেবে পরিচিত ফালাকাটা ব্লকের এই দু’টি গ্রামে বর্ষা বাদ দিয়ে সারা বছরই বিভিন্ন সব্জি চাষ হতে থাকে।
দুই গ্রামের মাঝখানে বয়ে গিয়েছে বীরকুটি নদী। বর্ষার জলে প্লাবিত বীরকুটি নদীর পলি মিশ্রিত মাটি উর্বর করে দুই গ্রামের জমিকে। সব্জিই এলাকার প্রধান অর্থকরী ফসল। চাষিদের অভিযোগ, কৃষি দফতরের কর্মীরা গ্রামে এসে ঠিক মতো জমি পরিদর্শন করেন না। ফলে ফসলে রোগের উপসর্গ দেখা দিলেও তা জানার উপায় থাকে না বলে জানান তাঁরা। সব্জির গাছ বা মাটি নিয়ে গিয়ে তাঁদের ফালাকাটার কৃষি দফতরে দেখাতে হয়। তাই এখন প্রায় অদৃষ্টের উপর ভরসা করেই চাষ করতে হচ্ছে বলে তাঁদের অভিযোগ।
জয়চাঁদপুর গ্রামের চাষি তনয় মোদক বলেন, “নোটের সমস্যার জন্য আলু কম লাগাতে হয়েছে। প্রায় দু’বিঘা জমিতে শসা লাগিয়েছিলাম। সব কুঁকড়ে ফেটে যাচ্ছে।’’
গ্রামে কর্মীরা যান না, এমন অভিযোগও উঠেছে। যদিও এ কথা ফালাকাটার সহকারী কৃষি অধিকর্তা সুদেষ্ণা দাস অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, “চাষিদের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য সব পঞ্চায়েতে দফতরের কৃষি প্রযুক্তি সহায়ক রয়েছেন। চাষিদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কথা বলা তো সম্ভব নয়। পঞ্চায়েতে খোঁজ করলেই তাঁদের দেখা মিলবে। ফোন করলেও চাষির জমিতে চলে যান কর্মীরা। তবে শসা কেন নষ্ট হচ্ছে, সেটা না দেখে বলা সম্ভব নয়। আমি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় কৃষি প্রযুক্তি কর্মীদের পাঠাচ্ছি।”
এক বিঘা শসার জন্য বাঁশের দড়ির জাংলা বানানো, চাষ করা, সার দেওয়া, জল ও মজুরি বাবদ খরচ হয় প্রায় ৩০ হাজার টাকা। কিন্তু এ বার বিঘা থেকে ১০ হাজার টাকার শসা বিক্রি করতে না করতেই শসা নষ্ট হয়ে মরে যাচ্ছে গাছ। ক্ষীরেরকোট গ্রামের চাষি প্রহ্লাদ সরকার প্রায় ৯০ হাজার খরচ করে তিন বিঘা জমিতে শসা চাষ করেন। তিনি বলেন, “পরের চাষ কী ভাবে করব তাই জানি না।’’