পুরোটাই প্রস্তাবিত। আদৌ হবে কি না, হলে কবে হবে, তার কোনও নিশ্চয়তাও এখনও পর্যন্ত নেই। কিন্তু একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, কোচবিহার থেকে ট্রেন সীমান্ত পার করে ছুটতে পারে বাংলাদেশের মধ্যে দিয়ে কলকাতায়। অন্তত কেন্দ্রীয় সরকারের ঘোষণায় সে সম্ভাবনা উঠে এসেছে। যে রেলপথে ভারত-বাংলাদেশ উভয় সরকারের সম্মতি মিলেছে বলে দাবি।
গীতালদহ রেলপথের সমীক্ষার কথা সংসদে জানিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ নিজেই। দুই রেলপথ চালু হলে কোচবিহার এবং জলপাইগুড়ি থেকে ট্রেনে কলকাতার দূরত্ব অন্তত দেড়শো কিলোমিটার কমবে। ছয় থেকে আট ঘণ্টায় পৌঁছনো যাবে কলকাতায়।
হলদিবাড়ি এবং গীতালদহ দুইই কোচবিহারের জেলার দু’প্রান্তে। দেশভাগের আগে হলদিবাড়ি থেকে চিলাহাটি, দর্শনা হয়ে ট্রেন লাইন পৌঁছত পার্বতীপুরে। অন্য দিকে, গীতালদহ থেকে লালমণিরহাট হয়ে আর একটি লাইনও আসত পার্বতীপুরে। পার্বতীপুর থেকে নাটোর হয়ে কলকাতার ট্রেন চলাচল করত। শুরুর সময়ে দার্জিলিং মেল কলকাতা থেকে ছেড়ে পার্বতীপুর, চিলাহাটি, হলদিবাড়ি লাইন দিয়ে জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশন দিয়ে শিলিগুড়ি যেত। কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি যাওয়ার এই লাইনের কথা রবীন্দ্রনাথের জীবনস্মৃতি-তেও রয়েছে।
দেশভাগের পর কাঁটাতারের সীমান্তে হলদিবাড়ি থেকে চিলাহাটি এবং গীতালদহ থেকে মোগলহাট বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। কলকাতার সঙ্গে বিকল্প যোগাযোগ তৈরি হয় ঘুরপথে বিহার দিয়ে। রাজ্যের রাজধানীর সঙ্গে কোচবিহার-জলপাইগুড়ির দূরত্ব বেড়ে যায় দেড়শো কিলোমিটারেরও বেশি। নতুন দু’টি রেলপথ চালু হলে এক লাফে কলকাতা যাওয়ার সময়ও কমে যাবে। কোচবিহার থেকে কলকাতা পৌঁছনো যাবে মাত্র ৮ ঘণ্টায়।
গীতালদহ থেকে বাংলাদেশের মুঘলহাটের মাঝে ধরলা নদী রয়েছে। সেখানে রেল সেতু ছিল। দেশভাগের পরে ওই পথ বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৯৮ সালের বন্যায় ওই সেতুর একটি অংশ ভেঙে পড়ে। কোচবিহারের বাসিন্দাদের দাবি, ওই পথে ফের রেল যোগাযোগ শুরু হলে সব দিক থেকে জেলা এগিয়ে যাবে।
কোচবিহারের সাংসদ পার্থপ্রতিম রায় কিছু দিন আগে এই রেলপথের কথা সংসদে তুলেছিলেন। পার্থবাবু বলেন, “ওই পথ চালু আর্থ-সামাজিক সবদিক থেকে সফলতা মিলবে কোচবিহারের। শুধু কোচবিহার নয়, ডুয়ার্স সহ আশেপাশের একতি বড় অংশের মানুষ তাঁর ফল পাবেন।” কোচবিহার চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সম্পাদক রাজেন বৈদ বলেন, “ওই পথ চালু একান্তই প্রয়োজন। বাণিজ্যের ক্ষেত্রে খুব উপকার হবে।”