গরমে কচুরিপানায় ঢেকেছে মালদহের টাঙন নদী। নিজস্ব চিত্র
সোমবার দুপুর ১২টা। সে সময়ই তাপমাত্রার পারদ ছুঁয়েছে ৪২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঘড়ির কাঁটা দু’ঘণ্টা টপকাতেই সর্বকালীন রেকর্ড তাপমাত্রার পারদ চড়ল মালদহে, এমনই দাবি কৃষি দফতরের আবহাওয়া বিভাগের। তাঁদের দাবি, এ দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি ছুঁয়েছে। কৃষি দফতরের রেকর্ড অনুযায়ী, এ দিনই জেলার তাপমাত্রা সর্বোচ্চ হয়েছে।
এমনই আবহাওয়া আগামী দু’দিন আরও চলবে বলে জানান কৃষি দফতরের আবহাওয়া বিভাগের আধিকারিক কামাক্ষ্যানাথ বসু। তিনি বলেন, “তিন দশক ধরে আবহাওয়ার রেকর্ড রয়েছে। এ বারই প্রথম এপ্রিল মাসে জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁল। এমনকি, মে মাসেও জেলার তাপমাত্রা কখনও ৪৩ ডিগ্রির গণ্ডি টপকায়নি। আগামী, বুধবার থেকে আবহাওয়ার কিছুটা হলেও পরিবর্তন হতে পারে।”
কৃষি দফতরের আবহাওয়া বিভাগের দাবি, ২০১৩ সাল থেকেই জেলায় তাপমাত্রার পারদ চড়ছে। সে বছর জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ থেকে ৪০.১ ডিগ্রি। ২০১৪ সালে তাপমাত্রার পারদ ৪১ ডিগ্রি ছুঁয়েছিল। এ বার সর্বনিম্ন তাপমাত্রাই জেলায় ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর জন্য যথেচ্ছ গাছ নিধন, জলাশয় ভরাটকে দুষেছেন পরিবেশ কর্মীরা। মালদহের পরিবেশকর্মী রূপক দেবশর্মা বলেন, “শহর থেকে গ্রাম, দেদার গাছ কাটা হচ্ছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় জলাশয় ভরাট হচ্ছে। যার ফল এখন আমাদের ভুগতে হচ্ছে। প্রশাসন এখন থেকেই প্রাকৃতিক সম্পদ বাঁচাতে তৎপর না হলে, আগামী দিনে মানুষকে আরও সমস্যায় পড়তে হবে।”
রোদের তাপের মধ্যে কালবৈশাখী নিয়ে প্রশাসনের অন্দরে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। সম্প্রতি, বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর, বিদ্যুৎ দফতরের কর্তাদের নিয়ে প্রশাসনের কর্তা বৈঠক করেন। কন্ট্রোল রুমও জেলায় খোলা হয়েছে। এ ছাড়া, ত্রাণ মজুত থেকে শুরু করে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ত্রাণ শিবিরের বিষয়েও ব্লকগুলিকে নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। মালদহের অতিরিক্ত জেলাশাসক বৈভব চৌধুরী বলেন, “দুর্যোগ নিয়ে আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। এ ছাড়া, তাপপ্রবাহ নিয়ে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করা হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলিতে ওয়াটার বুথ চালু করা হয়েছে।”