Recruitment scam

চড়া রোদে প্রতিবাদে সদ্য পিতা, অন্তঃসত্ত্বা শিক্ষিকা

বৃহস্পতিবার ‘যোগ্য’ চাকরিহারাদের জমায়েত হয়েছিল জলপাইগুড়ির রাজবাড়ির দিঘিতে। সুপ্রিম কোর্টে মামলা করার প্রস্তুতিও নিচ্ছেন।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:৫৫
Share:

কলকাতা হাই কোর্ট।

এক জন সন্তান জন্মানোর পরের দিন শুনেছেন, হাই কোর্টের নির্দেশে চাকরি বাতিল হয়েছে, আর এক জনের এ দিনই চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার কথা ছিল সন্তানের জন্মের সম্ভাব্য তারিখ শুনতে। দু’জনেই উৎকন্ঠা নিয়ে ‘যোগ্য’ চাকরিহারাদের ফর্মপূরণের লাইনে দাঁড়ালেন জলপাইগুড়িতে। এ নির্দেশে পরিবারের চার জনের চাকরি বাতিল হয়েছে এমনও উদাহরণ রয়েছে জলপাইগুড়িতে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার ‘যোগ্য’ চাকরিহারাদের জমায়েত হয়েছিল জলপাইগুড়ির রাজবাড়ির দিঘিতে। সুপ্রিম কোর্টে মামলা করার প্রস্তুতিও নিচ্ছেন। জলপাইগুড়ি জেলায় ২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগের প্যানেলে অন্তত দেড় হাজার যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মী রয়েছেন বলে দাবি। তৈরি হয়েছে তাঁদের একটি নতুন সংগঠন, ‘এসএসসি ২০১৬ জয়েনিং’।

শহরের রাজবাড়ির দিঘিতে দাঁড়িয়েছিলেন মা হতে চলা এক শিক্ষিকা। চড়া রোদে দাঁড়িয়ে ঘামছিলেন। বললেন, “আজ চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার কথা ছিল, উনি সন্তান জন্মানোর সম্ভাব্য তারিখ দেবে বলেছিলেন। চিকিৎসককে ফোন করে বলেছি, ‘আজকে চাকরি বাঁচানোর লাইনে যাই’। উনি রাজি হয়েছেন।”

Advertisement

শিক্ষিকার সঙ্গে ছিলেন তাঁর অভিভাবক। তিনি বললেন, “মেয়েটা অন্তঃসত্ত্বা। এই অবস্থায় চিন্তামুক্ত, হাসিখুশি থাকা উচিত। তা নয়, এক রাশ উৎকন্ঠা আর হতাশায় আছে।” হাই কোর্টের নির্দেশের আগের দিনই সন্তান জন্ম হয়েছে আর এক শিক্ষকের। রাজবাড়ির দিঘির পাশে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, “বাবা হওয়ার খুশিটা এক দিনের বেশি থাকল না! চাকরি না থাকলে ওকে মানুষ করব কী করে!”

জলপাইগুড়ির এক প্রবীণ দম্পতির পুত্র-পুত্রবধু এবং মেয়ে-জামাই ২০১৬ সালের প্যানেলে নিয়োগ পেয়েছিলেন। তাঁরা জলপাইগুড়ির বাইরে কর্মরত ছিলেন। সেই পরিবারের তরফে এ দিন মামলার নথিতে সই করতে এসেছিলেন এক আত্মীয়। তাঁর কথায়, “পুরো পরিবারের রোজগারের মুখেই প্রশ্নচিহ্ন এ বার পড়ে গেল।” বৃহস্পতিবার যোগ্যদের তৈরি সংগঠনের তরফে সকলের ‘ওএমআর শিট’ এবং রোল নম্বর যাচাই করা হয়েছে।

তার পরেই তাঁদের ওকালতনামায় সই করানো হয়েছে এবং দু’হাজার টাকা করে মামলার খরচ বাবদ নেওয়া হয়েছে। সংগঠনের তরফে এক কর্মকর্তা বলেন, “সুপ্রিম কোর্টে অভিজ্ঞ আইনজীবীদের এক দিনের মামলা লড়ার ফি কয়েক লক্ষ টাকা। কতদিন মামলা চলবে জানি না! সে কারণে সকলের থেকে কিছু কিছু করে সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।”

কে যোগ্য সে বিচার করা হচ্ছে কী ভাবে?

সংগঠনের দাবি, হাই কোর্টের আগের রায়ে যে পাঁচ হাজারের চাকরি বাতিল হয়েছিল সে তালিকা রয়েছে। যোগ্য দাবি করে যাঁরা আসছেন, তাঁদের রোল নম্বর আগের বাতিল তালিকায় রয়েছে কি না তা মিলিয়ে দেখা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement