Tea Production

গাছ আছে, পাতাই নেই, আবহাওয়ার খামখেয়ালে ক্ষতির মুখে চা উৎপাদন

শীতের শেষে বৃষ্টি হয়নি ডুয়ার্সে। তরাইয়ের কিছু এলাকায় বৃষ্টি হলেও তা পরিমাণে সামান্যই। তার ফলে, চা পাতা বাড়তে পারেনি।

Advertisement

 অনির্বাণ রায় 

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৯:১১
Share:

সমস্যায় চা শিল্প। — ফাইল চিত্র।

সরকারি নির্দেশ রয়েছে। বাগানের সাইরেন শুনে শ্রমিকেরাও হাজির। কিন্তু পাতাই শুধু নেই। চা পর্ষদের নির্দেশ থাকলেও, শনিবার উত্তরবঙ্গের বহু চা বাগানে পাতা তোলা হল না। কারণ, নতুন চা পাতা বাড়ন্ত। এ বছর প্রথম ‘ফ্লাশ’-এর পাতা তোলার শুরুতেই বড়সড় ক্ষতির মুখে দাঁড়িয়ে চা বাগানগুলি। আবহাওয়ার কারণেই পাতার এমন সঙ্কট বলে দাবি চা মহল্লার।

Advertisement

এ বছর শীতের শেষে বৃষ্টি হয়নি ডুয়ার্সে। তরাইয়ের কিছু এলাকায় বৃষ্টি হলেও তা পরিমাণে সামান্যই। তার ফলে, চা পাতা বাড়তে পারেনি। জলপাইগুড়ি জেলায় চা তৈরির কারখানা তথা বটলিফ কারখানা রয়েছে ১০০টির কাছাকাছি। শনিবারে চা পাতা তোলার প্রথম দিনে কাজ হয়েছে বড় জোর ২০টি কারখানায়। পাতা নেই বলে এ দিন বন্ধই ছিল বেশিরভাগ চা বাগান। কাজ হয়নি বহু বড় বাগানে। ‘ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশন’ তথা আইটিএ-এর ডুয়ার্স শাখার চেয়ারম্যান জীবন পাণ্ডে বলেন, “এ বছরের যে আবহাওয়া, তা এক কথায় চায়ের জন্য ভয়াবহ।”

প্রতি বছর শীতের শুখা মরসুম শেষ হতে না হতেই পরে চা পাতা তোলা শুরু করার অনুমতি দেওয়ার জন্য চা সংগঠনগুলি অনুরোধ শুরু করে চা পর্ষদকে। কিন্তু এ বছর সম্পূর্ণ উল্টো ছবি। চা পর্ষদ অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু পাতার দেখা নেই চা গাছে। ‘টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া’র উত্তরবঙ্গের সচিব সুমিত ঘোষ বলেন, “প্রথম ফ্লাশের চা বিপর্যয়ের মুখে। কারণ, গত তিন মাসে বৃষ্টি হয়নি। এখন দিনের বেলায় তাপমাত্রা বেশ ভালই থাকছে। রাতে আবার তাপমাত্রা কমে যাচ্ছে অনেকটাই। চা গাছে পাতা বেরোতে পারছে না।” চা গাছের বৃদ্ধি আবহাওয়া-নির্ভর। সুমিত ঘোষ বলেন, “গত কয়েক বছরে আবহাওয়া কিন্তু অনেকটাই বদলেছে। এখন সময় এসেছে, আবহাওয়ার পরিবর্তন লক্ষ্য করে এত দিনের প্রচলিত চা চাষ পদ্ধতি বদলানোর। না হলে, চা শিল্প বাঁচানো সম্ভব নয়।”

Advertisement

পাতা তোলা হয়নি ছোট চা বাগানেও। ছোট চা চাষিদের সর্বভারতীয় সংগঠন ‘সিস্টা’-র সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “গাছে পাতা থাকলে, তবেই তো পাতা তোলা সম্ভব হবে। পাতা নেই, রোগপোকা চলে এসেছে। এ বারের চা উৎপাদন নিয়ে খুবই শঙ্কা রয়েছে।”

উত্তরবঙ্গে প্রথম ‘ফ্লাশ’-এর চা উৎপাদনের সামনেই বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন ঝুলিয়ে দিয়েছে আবহাওয়া।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement