—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
সাত মাস পেরিয়ে দেশে চায়ের উৎপাদনে ঘাটতি ১৩ শতাংশ। প্রথম ‘ফ্লাশ’ থেকেই, দেশে চায়ের উৎপাদন মার খাচ্ছে। এ রাজ্যের চা উৎপাদনের ঘাটতি দেশের গড়পড়তা হার থেকে অনেকটাই বেশি। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত এ রাজ্যে চা উৎপাদনে ঘাটতির হার ২০ শতাংশ ছাড়িয়েছে। দ্বিতীয় ‘ফ্লাশ’-এ চা উৎপাদন তুলনামূলক বাড়লেও, উৎপাদনের সার্বিক হার এখনও কম। দেশের চা উৎপাদন চলবে আরও মাস চারেক। দেশের চায়ের উৎপাদনের ঘাটতি আদৌ মিটবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যেই উৎপাদনে টান পড়ায় নিলাম এবং খুচরো বাজারে চায়ের দাম বেড়েছে। চা উৎপাদকদের দাবি, পুজোর আগে আবহাওয়ার হঠাৎ পরিবর্তন না হলে, বছরের শেষে উৎপাদনের ঘাটতি কিছুটা হলেও মিটতে পারে।
চা পর্ষদের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, উত্তর ও দক্ষিণ ভারত মিলিয়ে সারা দেশে গত জানুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত চা উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৫৬ কোটি কেজি। গত বছর, জুলাই মাস পর্যন্ত দেশে চা উৎপাদন ছিল প্রায় ৬৪ কোটি কেজি। এ বছর উৎপাদন কমেছে আট কোটি কেজিরও বেশি, প্রায় ১৩ শতাংশ। উত্তরবঙ্গে তথা এ রাজ্যে চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত উৎপাদন হয়েছে ১৫ কোটি কেজির কিছু বেশি, গত বছর জুলাই মাস পর্যন্ত উৎপাদন ছিল ২০ কোটি কেজিরও বেশি, উৎপাদন কমেছে প্রায় ২০ শতাংশ।
এ বছরের শুরু থেকেই চা পাতার ‘আকাল’ শুরু হয়েছিল। গত শীতের শেষ থেকে বৃষ্টি পায়নি উত্তরের চা বলয়। গরম বাড়তে থাকে অস্বাভাবিক হারে। চা পাতা ঝলসে যায়, উৎপাদন তো বটেই, চা পাতার গুণগত মান খারাপ হয়। দ্বিতীয় ‘ফ্লাশ’-এর শুরু থেকে বৃষ্টি পায় চা বলয়। কিছুদিনের মধ্যে অতিবৃষ্টি এবং বন্যায় ধাক্কা খায় উৎপাদন। যদিও শুধু জুলাই মাসের নিরিখে চা পাতার উৎপাদন বেড়েছে। চা পর্ষদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জুলাইয়ের তুলনামূলক ‘ভাল’ উৎপাদনের নেপথ্যে রয়েছে ছোট চা বাগানের পাতা। শুধু জুলাই মাসে দেশে চা উৎপাদন হয়েছে ১৪ কোটি ৭০ লক্ষ কেজি। এই উৎপাদনের মধ্যে দেশের উত্তর এবং দক্ষিণের ক্ষুদ্র চা বাগান থেকে এসেছে প্রায় আট কোটি কেজি, অর্থাৎ, অর্ধেকেরও বেশি। ক্ষুদ্র চা চাষিদের সর্বভারতীয় সংগঠন ‘সিস্টা-র সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “দেশের চায়ের ভান্ডার এখন ছোট বাগানই ভরছে। সে কারণেই ছোট বাগান নিয়ে পৃথক নীতি ঘোষণার দাবি জানিয়ে চলেছি।”