ফরমান: সাসপেনশন উঠল জেলার ডিআই-এর। নিজস্ব চিত্র
দাড়িভিট কাণ্ডের পরে সাসপেন্ড হয়েছিলেন উত্তর দিনাজপুরের জেলার তৎকালীন স্কুল পরিদর্শক রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল। দীর্ঘ তিন মাস সাসপেন্ড থাকার পরে অবশেষে শুক্রবার সেই সাসপেনসন তুলে নিল রাজ্যের শিক্ষা দফতর। তাঁকে এ দিন থেকে রাজ্যের শিক্ষা দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর পদেও বসানোর নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। তাই তাঁর শাপমোচনই হল। যদিও এখনও প্রশাসনিক ভাবে কোনও নির্দেশ তিনি সন্ধে পর্যন্ত পাননি বলেই জানান রবীন্দ্রনাথবাবু। তিনি বলেন, ‘‘এখনও সরকারি কোনও নির্দেশ হাতে পাইনি। সরকারি নির্দেশ হাতে পেলেই বুঝতে পারব কী হয়েছে।’’
গত ২০ সেপ্টেম্বর শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় ইসলামপুরের দাড়িভিট হাইস্কুল। সেখানে গুলিতে নিহত হয় ওই স্কুলের প্রাক্তন দুই ছাত্র। গুলিবিদ্ধ হয়েছিল ওই স্কুলের দশম শ্রেণির এক ছাত্র। তৎকালীন জেলা স্কুল পরিদর্শক রবীন্দ্রনাথবাবু নিজেই সেখানে যান। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিডিও এবং স্কুল পরিদর্শকের উপস্থিতিতে স্কুল পরিচালন সমিতি বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেন ওই দুই শিক্ষককে এই স্কুলে নিয়োগ করা হবে না। এ ব্যাপারে লিখিত সিদ্ধান্ত হয়। তবে এর পরেই গত ২০ সেপ্টেম্বর ফের দুই শিক্ষককে পুলিশ দিয়ে নিয়োগ করাতে পাঠালে গন্ডগোল বাধে। জেলাশাসক অরবিন্দ কুমার মিনা শিক্ষা দফতরে ওই ঘটনা নিয়ে যে রিপোর্ট পাঠান, তাতে ১৮ সেপ্টেম্বর ঘটনার পরে সব জানা সত্ত্বেও স্কুল পরিদর্শক দুই শিক্ষককে নিয়োগ করতে পাঠান বলে উল্লেখ করেন। তার ভিত্তিতেই রবীন্দ্রনাথবাবুকে সাসপেন্ড করা হয়।
শিক্ষা দফতরের সূত্রই জানিয়েছে, রবীন্দ্রনাথবাবু শিক্ষা দফতরকে জানিয়েছিলেন, গত ১৯ সেপ্টেম্বর প্রধান শিক্ষকই তাঁকে ওই দুই শিক্ষককে নিয়োগ করানোর জন্য চাপ দিতে থাকেন। এমনকী লোক পাঠিয়ে নিয়োগের চিঠি নিয়ে আসেন। তা ছাড়া জেলায় স্কুল পরিদর্শক হিসাবে দায়িত্ব নিয়ে আসার পরে রবীন্দ্রনাথবাবুই প্রথম শিক্ষা দফতরকে লিখিত ভাবে জানিয়েছিলেন, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে জেলায় যে শিক্ষক নিয়োগের প্রস্তাব পাঠানো রয়েছে, বাস্তবে তত শূন্যপদ নেই। শূন্যপদের সংখ্যা অনেক কম। তাই বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে। পুরনো সমস্যা এ ভাবে মেটানোর চেষ্টা করেছিলেন বলেই তাঁর সাসপেনসন তুলে বরং উঁচু পদই দেওয়া হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।