অশোকই মেয়র প্রার্থী, শিলিগুড়িতে ঘোষণা সূর্য মিশ্রের

অশোক ভট্টাচার্যই যে শিলিগুড়ির মেয়র পদপ্রার্থী শনিবার তা ঘোষণা করে দিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। শিলিগুড়ি পুরবোর্ড ‘দখল’ করতে পার্টি যে প্রথা ভেঙে ‘সচেতন’ ভাবেই ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাও জানিয়ে দিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক। গত বিধানসভা ভোটের পর থেকে শিলিগুড়িতে একের পরে এক ভোটে বামেরা কোণঠাসা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৫ ০১:৩১
Share:

শিলিগুড়ি পুরভোটে মেয়র প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণার পর অশোক ভট্টাচার্য। মঞ্চে আছেন সূর্যকান্ত মিশ্রও। ছবি: সন্দীপ পাল।

অশোক ভট্টাচার্যই যে শিলিগুড়ির মেয়র পদপ্রার্থী শনিবার তা ঘোষণা করে দিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র।

Advertisement

শিলিগুড়ি পুরবোর্ড ‘দখল’ করতে পার্টি যে প্রথা ভেঙে ‘সচেতন’ ভাবেই ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাও জানিয়ে দিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক। গত বিধানসভা ভোটের পর থেকে শিলিগুড়িতে একের পরে এক ভোটে বামেরা কোণঠাসা হয়েছে। তাতে দলের কর্মী-সমর্থকরা অনেকেই হতাশ। তাই আসন্ন পুরভোটে অশোকবাবুর নেতৃত্বে ‘লড়াই’ শুরুর পরে কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে তো বটেই, নানা মহল থেকেই ‘স্বতঃস্ফূর্ত’ সাড়া মিলেছে বলে সিপিএমের দাবি।

এ দিন ইন্ডোর স্টেডিয়ামে সভার পর থেকেই, বাম প্রার্থীরা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন, “আমরা জিতলে তো অশোকবাবুই মেয়র হবেন, তৃণমূল বলুক ওদের মেয়র পদপ্রার্থী কে?” সূর্যবাবু এ দিন বলেন, “ আমরা তো পরিষ্কার বলছি, অশোকবাবু আমাদের মেয়র। তৃণমূল বলুক,তাদের মন্ত্রী পুরভোটে তাদের নেতা।” তাঁর বক্তব্যে সূর্যবাবু বলেন, “অশোকবাবু দীর্ঘদিন মন্ত্রী ছিলেন। দলের রাজ্য কমিটির প্রবীণ সদস্য। এমন কাউকে সাধারণত পুরভোটে আমরা প্রার্থী করি না। কিন্তু শিলিগুড়ির জন্য সচেতন ভাবেই অশোকবাবুকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” অশোকবাবু পুরমন্ত্রী থাকার সময়ে শিলিগুড়িতে উন্নয়নের নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাও জানান সূর্যবাবু।

Advertisement

সিপিএম সূত্রের খবর, প্রকাশ্য সভায় দলের রাজ্য সম্পাদকের উপস্থিতিতে অশোকবাবুকে মেয়র পদপ্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত আগেই নেওয়া হয়েছিল। দলের জেলা নেতাদের একাংশের দাবি, অশোকবাবু পুরভোটে প্রার্থী হওয়ার পরে বহু ‘বসে’ যাওয়া কর্মী-সমর্থকদের স্বতস্ফূর্ত ভাবে প্রচারে নামতে দেখা গিয়েছে।


শিলিগুড়িতে পুরভোটের প্রচারে পাল্লা দিচ্ছে সব দলই। শনিবার সন্দীপ পালের তোলা ছবি।

প্রাক্তন পুরমন্ত্রীকে প্রকাশ্যে মেয়র পদপ্রার্থী ঘোষণা করে আরও একটি রাজনৈতিক লক্ষ্য পূরণ হল বলে বামেদের দাবি। আর তা হল, ২০০৯ সালে ‘পরির্তনের হাওয়ায়’ শিলিগুড়ি পুরবোর্ড বামেদের হাতছাড়া হয়। তৎকালীন ক্ষমতাসীন বামেদের কাছে যা ছিল বড় ধাক্কা। এখন বিরোধী আসনে বসা বামেরা সেই শিলিগুড়িকে অস্ত্র করেই আগামী বিধানসভা ভোটের জন্য উত্তরবঙ্গের ‘জমি’ তৈরি করতে চাইছে।

উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতমবাবু অবশ্য দাবি করেছেন, বামেদের ঘোষণাতেও কোনও প্রভাব পড়বে না। গৌতমবাবু বলেন, “ওদের যেটা মনে হয়, যাঁকে মনে হয় মেয়র ঘোষণা করতে পারেন। আসল কথা বলবে মানুষই।”

প্রথা ভেঙে মেয়র পদপ্রার্থী ঘোষণার সিদ্ধান্তে বামেদের রাজনৈতিক সুবিধে হবে না বলে দাবি অনান্য বিরোধী দলগুলিরও। বিজেপির জেলা সভাপতি রথীন বসু বলেন, “শিলিগুড়ি শহরের যে উন্নয়নের সুযোগ ছিল, অশোকবাবুর সময়েই সেই সুযোগ নষ্ট হয়েছে। তাই বামেদের আশার কোনও কারণ নেই।”জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্কর মালাকারের কটাক্ষ, “সিপিএমের কেউ মেয়র হতে পারবেন না। এটা ওঁরাও জানেন।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement