তৃণমূল কর্মীকে গুলি করে খুনের চেষ্টায় অভিযুক্ত সিপিএমের জয়ী প্রার্থী সোমবার আত্মসমর্পণ করলেন মালদহ জেলা আদালতে। বিচারক দোলন চাকি নামে ওই সিপিএম নেতাকে ৪ দিন জেল হাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। আদালতে আত্মসমর্পণ করতে যাওয়ার আগে ওই প্রার্থী দাবি করেন, ‘‘আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তৃণমূল আমাকে হারানোর খুব চেষ্টা করেছিল। পুলিশকে দিয়ে আমাকে মারও খাইয়েছিল। তবে মানুষ আমার পাশে থাকায় জিয়েছি। তাই এখন মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে।’’ তাঁর আইনজীবী সুভাষ মৈত্র বলেন, ‘‘ঘটনার সময় আমার মক্কেল ছিলেন না। তাঁর জামিনের আবেদন করেছিলাম।’’ সরকারি আইনজীবী জয়ন্ত মজুমদার বলেন, ‘‘ধৃতকে সিজেএম প্রদীপকুমার রায়ের এজলাসে তোলা হয়েছিল। বিচারক তাঁর জামিনের আবেদন না মঞ্জুর করে আগামী ২২ তারিখ পর্যন্ত জেল হাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।’’
গত ২৯ এপ্রিল গভীর রাতে ইংরেজবাজার পুরসভার ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের ঘটনা। রায়পাড়ার বাসিন্দা তৃণমূল কর্মী পিণ্টু মণ্ডলের বাড়িতে ঢুকে এবং জানলা দিয়ে গুলি করার অভিযোগ ওঠে সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ভোটের ফলাফল প্রকাশের দিন পিন্টুর বাড়ির সামনে সিপিএমের কর্মীরা বিজয় মিছিল করেন। পিণ্টু প্রতিবাদ করায় তাঁদের সঙ্গে বচসা হয়। তখনকার মতো ঝামেলা মিটেও গিয়েছিল। গভীর রাতে দোলন চাকির নির্দেশে তাঁর অনুগামীরা পিণ্টুকে খুনের চেষ্টা করেন। তাঁর বুকের বাম দিকে গুলি লেগেছিল।
এই ঘটনায় দুলালবাবু-সহ পাঁচ জনের নামে ইংরেজবাজার থানায় লিখিত অভিযোগ হয়। সুরেশ দেওয়ান নামে এক যুবককে আগেই গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তিনি এখন জেল হাজতে। আগামী ২৬ তারিখ ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচন রয়েছে। পুরসভায় একক ভাবে তৃণমূল পেয়েছে ১৫টি আসন। আর বামফ্রণ্ট পেয়েছে ৯টি এবং বিজেপি তিনটি, কংগ্রেস ২টি আসন। চেয়ারম্যান পদে বামেরা লড়বে কি না তা নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন জেলা সিপিএম নেতৃত্ব। তবে দোলনবাবু বলেন, ‘‘দল চেয়ারম্যান নির্বাচনে লড়বে কি না, তা দলের ব্যাপার। যদি লড়ে তাতে আমি যাতে যোগ নিতে পারি তার জন্য এ দিন আদালতে আত্মসমর্পণ করেছি। না করলে তৃণমূলের নির্দেশে পুলিশ চেয়ারম্যান নির্বাচনেরই দিন গ্রেফতার করে নিতে পারি।’’
সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, ‘‘ইংরেজবাজারের বিভিন্ন ওয়ার্ডে সন্ত্রাস করে তৃণমূল জিতেছে। যেখানে তাদের শক্তি নেই অর্থাৎ মানুষ নিরপেক্ষ ভাবে ভোট দিতে পেরেছে, সেই সব ওয়ার্ডে আমরা জিতেছি। ভোটের আগে আমাদের নেতা কর্মীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করছে তৃণমূল। তবে চেয়ারম্যান পদে লড়ব কি না তা এখনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করা হবে।’’ রাজ্যের মন্ত্রী তথা বিদায়ী চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী বলেন, ‘‘এখানে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ব্যাপার নেই। অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা হয়েছে। আর মিথ্যা কী সত্যি তা আদলতই প্রমাণ করুক।’’