প্রখর: রোদ থেকে বাঁচতে সাইকেল আরোহীর ভরসা ওড়না, ছাতা। বালুরঘাটে মঙ্গলবার। ছবি: অমিত মোহান্ত
মরু শহর জয়পুর, জৈয়সলমেরকেও টেক্কা দিল শিলিগুড়ি! মঙ্গলবারের তাপমাত্রার পারদ তাই-ই বলছে। রাজস্থানের শহরগুলিতে যেখানে তাপমাত্রার পারদ ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে, সেখানে শিলিগুড়ির তাপমাত্রা পৌঁছেছে ৩৯ ডিগ্রিতে। বেলা ১০টা বাজলেই গরম হাওয়া। সত্যিকারের ‘লু’ বইছে দার্জিলিং পাহাড়ের পাদদেশে এই শহরে। উত্তপ্ত পাহাড়ের আঁচ এসে লাগল নাকি— এই গরমেও রসিকতা করে বলছেন কেউ কেউ।
গরম ছড়িয়েছে জলপাইগুড়িতেও। এ দিন সেখানকার তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে। বেলা বাড়তে রাস্তাঘাট তুলনায় সুনসান। মুখ ঢেকে মোটরবাইক, স্কুটিতে যাতায়াত করছেন আরোহীরা। প্রবল গরমে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে যাওয়ার ভিড়ও বাড়ছে। স্কুল-কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকারা অনেকেই জানাচ্ছেন, প্রবল দাবদাহের কারণে ক্লাস নিতে সমস্যা হচ্ছে। সে জন্য ‘লু-পরিস্থিতি’ স্বাভাবিক না হওয়া অবধি স্কুলের সময়সীমা পাল্টানোর পক্ষে সওয়াল করেছেন অনেকে। শিলিগুড়ি অভিভাবক মঞ্চের সভাপতি সন্দীপন ভট্টাচার্য জানান, যা পরিস্থিতি তাতে বৃষ্টি না নামা অবধি এক সপ্তাহের জন্য স্কুল ছুটি দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ছে।
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক সুবীর সরকার বলেন, ‘‘শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ি-সহ উত্তরবঙ্গে সাধারণত অগস্ট মাসে অনেক সময় গরম বাড়ে। কিন্তু শেষ কবে জুলাইয়ে এমন ‘লু’ বয়েছে, মনে পড়ছে না। আশা করা যাচ্ছে, দু’দিনের মধ্যে অবস্থা পাল্টাবে।’’ কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক গোপীনাথ রাহা জানান, নিম্নচাপ তৈরি হচ্ছে। তা ঘনীভূত হলে বৃষ্টি হবে, গরমও কমবে বলে ভরসা দিয়েছেন গোপীনাথবাবু।
আবহাওয়াবিদেরা জানাচ্ছেন, বঙ্গোপসাগরে ওড়িশার কাছে গভীর নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়েছে। যা পশ্চিমমুখী হয়ে রয়েছে। এতে এই অঞ্চলে আকাশ অত্যাধিক পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। জলীয় বাস্প বাতাস থেকে উধাও হয়ে যাওয়ায় গরম বাড়ছে। সমতলের দুই শহরের তাপমাত্রার আঁচ পৌঁছেছে পাহাড়েও। দার্জিলিঙের এ দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৩, গ্যাংটকের ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।