সুদীপ্ত সেন।
তাঁর নির্দেশিত ছোট-বড় মিলিয়ে ন’টি চলচ্চিত্রের মধ্যে আপাতত ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ই সর্বাধিক চর্চিত এবং বিতর্কিত। তাঁর ঝুলিতে রয়েছে শ্রেষ্ঠ তথ্যচিত্র নির্মাতা হিসেবে পাওয়া জাতীয় পুরস্কার-সহ বেশ কিছু সম্মান। তিনি দাবি করছেন, তাঁর অনুপ্রেরণার অন্যতম উৎস জলপাইগুড়ি। বলছেন, ‘‘তিস্তা, করলায় নৌকোয় ঘুরে বেড়ানো আমার অনুপ্রেরণা।’’ মঙ্গলবার সকালে টেলিফোনে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র পরিচালক সুদীপ্ত সেন বললেন, ‘‘সামনের মাসেই হয়তো জলপাইগুড়ি যাব। জলপাইগুড়ি আমার অনুপ্রেরণা। বার বার ফিরে যাই।’’
জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলের ছবি রয়েছে সুদীপ্ত সেনের সমাজ মাধ্যমের দেওয়ালে। সেখানে লিখেছেন— ‘জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলের প্রাক্তনী হিসেবে আমি গর্বিত’। চতুর্থ থেকে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত জেলা স্কুলে পড়াশোনা করেছেন তিনি। জন্ম জলপাইগুড়িতেই। বাবার চাকরির বদলি-সূত্রে বিভিন্ন শহর-জনপদে বেড়ে ওঠা এবং তার পরে মুম্বইয়ের পাকাপাকি বাসিন্দা। কিন্তু থেকে গিয়েছে জলপাইগুড়ির প্রতি টান। সুদীপ্ত বললেন, ‘‘আমার যা কিছু ভাল, তার অনুপ্রেরণা জলপাইগুড়ি।’’ এ দিন বললেন, ‘‘জলপাইগুড়িতে গেলেই আমি প্রথমে যাই তিস্তার পাড়ে। তার পরে, করলা নদীতে নৌকায় চাপবই চাপব!’’ কোভিডের বছর তিনেক আগে, জলপাইগুড়ি ঘুরে গিয়েছেন তিনি। জলপাইগুড়িতে রয়েছেন তাঁর আত্মীয়স্বজনেরা।
শুধু নদী নয়, সুদীপ্ত সেনের মনের মধ্যে গেঁথে রয়েছে শহরের অলিগলির মিষ্টির দোকানও। সমাজমাধ্যমে সুদীপ্ত নিজের সম্পর্কে লিখেছেন— ‘ভোজনবিলাসী’। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের বাড়ি ছিল রায়কত পাড়ায়। জলপাইগুড়ি শহরের অলিগলিতে কত মিষ্টি খেয়েছি! এখনও জলপাইগুড়ি গেলে অলিগলির দোকানেই মিষ্টি খেয়ে বেড়াই! বলে দিতে পারি, কোন মিষ্টি কোন গলির দোকানের!’’ মিষ্টি-সূত্রেই এসে যায় বেলাকোবা আর ফুলবাড়ির প্রসঙ্গ। টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ি ঘরানার চমচমের জন্য বিখ্যাত বেলাকোবা আর লালমোহন বা পান্তুয়ার জন্য ফুলবাড়ি। তিনি বলেন, ‘‘জলপাইগুড়ি গেলে, অবশ্যই বেলাকোবার চমচম আর ফুলবাড়ির পান্তুয়া খেতে যাই। জলপাইগুড়ি আমার জীবনের বড় একটা অংশ নিয়ে বসে আছে। আমার জীবনের যাঁরা সব চেয়ে কাছের— দিদি, জামাইবাবু, ভাগ্নে, মামাবাড়ি থেকে পরিবারের বড় অংশই জলপাইগুড়িতে।’’ পরিচালকের সংযোজন: ‘‘বলতে পারেন, আমার হৃদয় জলপাইগুড়িতেই থাকে।’’
তাঁর পরিচালিত ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ নিয়ে বিতর্ক তাঁকে আহত করেছে বলে জানালেন সুদীপ্ত। সে ছবির প্রদর্শনে এ রাজ্যে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আজ, বুধবার সুপ্রিম কোর্টে শুনানি রয়েছে জানিয়ে সুদীপ্ত বলেন, ‘‘আমি চাই, জলপাইগুড়ি-সহ গোটা রাজ্যে ছবিটি দেখানো হোক। দেখা যাক, আদালত কী রায় দেয়।’’