প্রচারে: বুনিয়াদপুরে সুব্রত বক্সি। ছবি: অমিত মোহান্ত
দলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রের নেতৃত্বে সকলে এক হয়ে দক্ষিণ দিনাজপুরে আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে লড়াইয়ের ডাক দিলেন তৃণমূল রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। বুধবার গঙ্গারামপুরের রবীন্দ্রভবনে আয়োজিত তৃণমূলের কর্মী বৈঠকে তিনি ওই বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি ‘আখের গোছানো’ নেতাদের একাংশকে সতর্ক করেছেন। হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘কোনও কোনও অঞ্চল ও ব্লক সভাপতি আছেন। যাঁরা সকালে উঠে দলীয় কার্যালয়ে না গিয়ে পঞ্চায়েত অফিসে বসে ১০০ দিনের মাটি কাটা ও পুকুর কাটার তদারকি করেন। এটা সমীচিন নয়।’’ জেলার গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে অবশ্য প্রকাশ্যে আমল দেননি তিনি। পারিবারিক মতভেদের সঙ্গে তুলনা করে সুব্রতবাবু নিজেদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে ওই মতপার্থক্য মিটিয়ে নিতে নেতা- কর্মীদের পরামর্শ দিয়েছেন।
এ দিন জেলাস্তরের কর্মী বৈঠকে দলের সমস্ত শাখা সংগঠন, পঞ্চায়েত, জেলাপরিষদ ও পুরসভার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। তার আগে জেলা তৃণমূল সভাপতি বিপ্লব মিত্র, সাংসদ অর্পিতা ঘোষ, প্রাক্তনমন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তী, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা, প্রাক্তন বিধায়ক সত্যেন রায়দের নিয়ে তৃণমূল রাজ্য সভাপতি সুব্রতবাবু রুদ্ধদ্বার বৈঠক করে তাঁদের ঐক্যের কথা বলেন। তাঁরা কর্মীদের কাছে দলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রের গুরুত্ব তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন। গোষ্ঠীর নেতা নয়, তৃণমূল জেলা সভাপতির নেতৃত্বে সকলকে দলীয় কর্মসূচী থেকে সাংগঠনিক প্রক্রিয়ায় সামিল হতেও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ভিড়ে ঠাসা রবীন্দ্রভবনে বৈঠকের শুরুতে বিপ্লববাবু সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের ‘ইগো’, মনোমালিন্য পরিত্যাগ করে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে সঙ্ঘবদ্ধ ভাবে বিরোধী দলের সঙ্গে লড়ার ডাক দেন। সুব্রতবাবু তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট করে দিয়েছেন, দলের জেলা বা রাজ্য সভাপতির নির্দেশ মানে সেটা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরই নির্দেশ। তা মেনে সকলকে চলতে হবে। তিনি বলেন, ‘‘দলে থেকে অনেকে নিজে ও নিজের পরিবারের স্বার্থে মমতার মুখ ও ছবি ব্যবহার করবেন। এটা ঠিক নয়।’’ সুব্রতবাবু আরও বলেন, ‘‘তৃণমূল বোটানিক্যাল গার্ডেনের অশ্বত্থ গাছের মতো। ডালপালায় ঘুণ ধরলে কেটে অথবা রাসায়নিক দিয়ে গাছকে রক্ষা করা হয়। দলকেও সেই ভাবে রক্ষা করা হবে।’’
তবে এ জেলায় দলের তীব্র গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে গত বিধানসভা ভোটে ৬টি আসনের মধ্যে ৪টিতে তৃণমূলের পরাজয় ঘটে। তার পরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটাতে রাজ্য নেতৃত্ব বার বার সতর্ক করে গিয়েছেন। তা সত্ত্বেও নতুন করে দলীয় নেতৃত্বের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব অব্যাহত রয়েছে। সুব্রতবাবু এ দিন ফের দলীয় ঐক্য বজায় রাখার বার্তা দিয়ে গেলেও কতটা তা কাজে লাগে পঞ্চায়েত ভোটের প্রক্কালে তা বোঝা যাবে।