নেতৃত্বে: কোচবিহারে দলীয় কর্মীকে বোঝাচ্ছেন তৃণমূল নেতা সুব্রত বক্সী। শুক্রবার। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব
পঞ্চায়েত ভোটের আগে আত্মতুষ্টিতে ভোগা দলের কর্মী সমর্থকদের সচেতন করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার দলকে সঙ্ঘবদ্ধ লড়াইয়েরও নির্দেশ দিলেন।
শুক্রবার কোচবিহার ইন্ডোর স্টেডিয়ামে জেলা পঞ্চায়েত রাজ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সুব্রতবাবুর সামনেই দলের কোন্দল নিয়ে সরব হন দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ। শুধু তাই নয়, কেউ কেউ তৃণমূলে থেকেও তলে তলে পদ্মফুলের সঙ্গে সম্পর্ক রাখছেন বলেও অভিযোগ ওঠে। মুকুল রায়ের নাম উল্লেখ না করেও তাঁর হাত ধরে অনেকে যে টিকিটের লোভে পদ্মফুলে যেতে পারে সে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তৃণমূল নেতারা।
সে সব শোনার পরে সুব্রতবাবু বলেন, “সঙ্ঘবদ্ধ ভাবে সমস্ত জায়গায় লড়াই করতে হবে। দলে সবাইকে সম্মান ও গুরুত্ব দিতে হবে। কেউ যদি নিজেদের বড় ভেবে কাউকে অবজ্ঞা করেন। দূরে সরিয়ে দেন, মনে রাখবেন দল কাউকে ছেড়ে কথা বলবে না।” সেই সঙ্গে তিনি দলীয় নেতাদের নির্দেশ দেন, কারও বিরুদ্ধে কিছু বলার থাকলে বা কাউকে অপছন্দ হলে দলকে জানাতে হবে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে টিকিট নিয়ে কাউকে পেশি শক্তি দেখিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা হলেও দল ছেড়ে কথা হবে না বলেও তিনি হুঁশিয়ারি দেন। পাশাপাশি তিনি বলেন, “পঞ্চায়েত নির্বাচনে জিতলেই রাজনৈতিক ভাবে শক্তিশালী, এমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই। এর আগে পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় থেকেও বামেরা বিধানসভায় হেরে যায়।”
একদিকে, বিজেপির সংগঠন ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে উঠছে। অন্যদিকে, দলের ভিতরের কোন্দলের প্রভাব সংগঠনে পড়া নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন তৃণমূল নেতারা। বিশেষ করে মুকুল রায় জেলা সফরে এলে পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে তা নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে। এই অবস্থায়, বৃহস্পতিবার তৃণমূল কর্মীদের হঠিয়ে দিয়ে বিজেপি কোচবিহার ১ নম্বর ব্লকে স্মারকলিপি দেয়। জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘বিজেপির বিরুদ্ধেই বোমা-গুলি চালিয়ে ত্রাস তৈরি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে।’’ উদয়নবাবুর অভিযোগ, পঞ্চায়েতের সতেরোশো আসনে সতেরো হাজার জন প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা করছেন। অনেকে নিজেকে নিজে আগামীর পঞ্চায়েত প্রার্থী বলেও ঘোষণা করেছেন বলে তাঁর অভিযোগ। তাঁর আরও অভিযোগ, অঞ্চল তৃণমূলের কিছু নেতা কাকে টিকিট দেবেন তা নিয়ে প্রকাশ্যে ঘোষণা করছেন।
অনেকেই জোড়াফুলে টিকিট না পেলে পদ্মফুলে যাওয়ার রাস্তাও খোলা রাখছেন বলেও উদয়নবাবুর দাবি। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, “যারা পিছনের দরজা দিয়ে পদ্মফুলে যাওয়ার কথা ভাবছেন। তাঁরা পিছনের দরজা বড় রাখবেন, যাতে সহজেই পালাতে পারেন।” সুব্রতবাবু নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানো, পুরনো কর্মীদের সম্মান দেওয়ায় জোর দেন। সাংসদ পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “কোচবিহারে সংগঠন শক্তিশালী। পঞ্চায়েতে সব আসনেই জিতব।”