অসুস্থ: হাসপাতালে তপন হাত। —নিজস্ব চিত্র।
মিড সেমেস্টারের পরীক্ষার সূচি তৈরি করতে হবে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করেই। এমন দাবি ছিল ছাত্রছাত্রীদের একাংশের। এই দাবিতেই বৃহস্পতিবার রাতভর দফতরের বাইরে তালা ঝুলিয়ে আটকে রাখা হল উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদ বিভাগের ডিন তপন হাতকে।
অভিযোগ, তার আগে জুতোর মালা পড়িয়ে একটি কুশপুতুলকে বসানো হয় ডিনের পাশের চেয়ারে। বন্ধ করে দেওয়া আলো। তপনবাবু জানান, রাতে তাঁর খাবার ছিল জল ও বিস্কুট। শৌচাগার যাওয়ার অনুমতি অবশ্য মেলে। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত এই পরিস্থিতি চলে। এর জেরে অসুস্থ হয়ে পড়েন ডিন। অভিযোগ, খবর পেয়ে সাংবাদিকরা পৌঁছলে তাঁদের উপর চড়াও হয় ছাত্রছাত্রীদের একাংশ। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপরেই অসুস্থ তপনবাবুকে এমজেএন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।
অভিযুক্ত ছাত্ররা টিএমসিপির সদস্য বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও সংগঠনের কোচবিহার জেলা সভাপতি সাবির সাহা চৌধুরীর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও কর্মসূচি নিতে গেলে সংগঠনের আগাম অনুমতি দরকার। তা কেউ নেয়নি। তবুও কেউ জড়িত থাকলে সাংগঠনিক ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য চিরন্তন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ছাত্রছাত্রীরা কিছু দাবি নিয়ে আন্দোলন করেছে। একটা ঘটনা ঘটেছে। আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মেটানোর চেষ্টা হচ্ছে।” বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্টার শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ডিনের পদত্যাগের দাবিতে ছাত্রছাত্রীরা আন্দোলন করেছে। আমিও সারা রাত বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিলাম। উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” পাশাপাশি তিনি সাংবাদিকদের উপর আক্রমণের ঘটনায় তিনি উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। কোচবিহারের পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল বলেন, “ঘটনা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, কয়েক দিন পর থেকেই মিড সেমেস্টারের পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা। এত দিন প্রত্যেকটা বিভাগে নিজস্ব সুবিধা অনুযায়ী পরীক্ষার সূচি তৈরি হত। এ বারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কেন্দ্রীয়ভাবে সেই সূচি তৈরি করেছে। আর এতেই আপত্তি জানায় ছাত্রছাত্রীদের একাংশ।