বাড়ি ফেরেননি মা-মেয়ে

রবিবার ভক্তিনগর থানায় ওই ছাত্রী এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন উত্তরায়ণ এলাকার বাসিন্দা। ফেসবুক পোস্টের ‘অপব্যাখ্যা’ করে হেনস্থা ও ভাঙচুরের পাল্টা নালিশ জানিয়ে থানায় অভিযোগ করবে বলে জানায় তরুণীর পরিবার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:৩১
Share:

ফেসবুক পোস্টের ‘অপব্যাখ্যা’ করে হেনস্থা ও ভাঙচুরের পাল্টা নালিশ জানিয়ে থানায় অভিযোগ করবে বলে জানায় তরুণীর পরিবার।

ফেসবুক পোস্টকে ঘিরে বাড়িতে হামলা, গোলমালের পিছনে পথ কুকুরের দেখভালের কোনও সম্পর্ক রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা শুরু করল পুলিশ। রবিবার ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের অরবিন্দপল্লিতে ফেসবুক নিয়ে ঝামেলার পর এ দিন এলাকার পরিবেশ ছিল থমথমে। এখনও উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তরে প্রথম বর্ষের ছাত্রী এবং তাঁর মা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন বলে বাড়ি ফিরতে পারেননি। ক’দিন তাঁদের বাড়িছাড়া হয়ে থাকতে হবে, তা কেউই বলতে পারছে না। পুলিশ সূত্রের খবর, মা ও মেয়ে অন্য এলাকায় এক পরিচিতের বাড়িতে আছেন। রাতের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার পর আতঙ্কে এখনই তাঁরা বাড়িতে ফিরতে চাইছেন না। এর মধ্যে সাদা পোশাকের পুলিশ এলাকায় নজর রাখছে।

Advertisement

রবিবার ভক্তিনগর থানায় ওই ছাত্রী এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন উত্তরায়ণ এলাকার বাসিন্দা। ফেসবুক পোস্টের ‘অপব্যাখ্যা’ করে হেনস্থা ও ভাঙচুরের পাল্টা নালিশ জানিয়ে থানায় অভিযোগ করবে বলে জানায় তরুণীর পরিবার। ছাত্রীর দাদা বলেন, ‘‘আমার বোন যুদ্ধের জন্য কাউকে জোর করতে না করেছিল মাত্র। সেনাদের নিয়ে কোনও অবজ্ঞা বা দেশদ্রোহের কথা লেখেনি। কিন্তু তা না দেখেই সবাই আমাদের বাড়িতে হামলা করল।’’ এর পরেই তিনি বলেন, ‘‘এর পিছনে অন্য কারণ রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। আমরা রাস্তার কুকুরদের বাঁচাতে গিয়ে অনেকের শত্রু হয়ে উঠেছি বলে মনে হচ্ছে এখন।’’

শিলিগুড়ি ডিসি (পূর্ব) গৌরব লাল বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত শুরু হয়েছে। আর বলা সম্ভব নয়।’’

Advertisement

প্রাথমিক তদন্ত উঠে এসেছে, গত এক বছর ধরে ছাত্রীর দাদা খুব কম খরচে কুকুরের নানারকম পরিষেবা দেওয়া শুরু করেছিলেন। তার জেরেই পশুপ্রেমী সংগঠনের একাশের সঙ্গে তাঁদের বিরোধ চলছিল কি না, তা দেখা হচ্ছে। এর আগেও পথ কুকুরের দেখভাল নিয়ে বারবার পরিবারটির সঙ্গে লোকজনের ঝামেলা হয়েছে। এর আগে একটি পথকুকুরকে ছ্যাঁকা দিয়ে নর্দমায় ফেলে দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদে অন্য এলাকার কয়েক যুবকের বিরুদ্ধে এফআইআর-ও দায়ের করেন ওই ছাত্রীর দাদা। এ সবের পর পুলওয়ামার ঘটনাকে সামনে রেখে দেশভক্তির মোড়কে পরিবারটির বাড়িতে হামলা হয়েছে কি না, তা দেখছে পুলিশ।

পুলিশ দেখেছে, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রীর ফেসবুক পোস্টগুলিতে বরাবরই আন্তর্জাতিক শান্তির বার্তা রয়েছে। দু’টি পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে যুদ্ধ হলে কী ভয়ঙ্কর পরিণতি হবে, তার ইঙ্গিতও রয়েছে বেশ কিছু পোস্টে। সেই পোস্টগুলির জন্যই নানা সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছে তাঁকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement