পাহাড়ে জিটিএ এলাকায় ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থা চালু করতে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে আলোচনা শুরু হল। এ জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে সংবিধান সংশোধন করতে হবে। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা নেতারা বহুদিন ধরেই পাহাড়ে পঞ্চায়েত ব্যবস্থা চালুর দাবি জানিয়ে আসছে। তারই প্রক্রিয়া শুরু করল নরেন্দ্র মোদী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
পাহাড়ে ২০০০ সালের পরে আর পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়নি। তত্কালীন দার্জিলিং গোর্খা পার্বত্য পরিষদের প্রধান সুবাস ঘিসিঙ্গ পঞ্চায়েত নির্বাচন করতে দিতে রাজি হননি। বিমল গুরুঙ্গ-রোশন গিরির জমানায় জিটিএ গঠনের সময় ত্রিপাক্ষিক চুক্তিতে বলা হয়, জিটিএ এলাকায় ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থা গঠন হবে। পঞ্চায়েত ও পুরসভার উপরে জিটিএ-ই নজরদারি করবে।
গত জানুয়ারিতে দিল্লিতে কেন্দ্র, রাজ্য ও মোর্চার ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে যত দ্রুত সম্ভব পঞ্চায়েত ব্যবস্থা চালু করার দাবি জানিয়েছিলেন রোশন গিরিরা। দিল্লিতে আসার আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও মোর্চা নেতারা এ বিষয়ে বৈঠক করেছিলেন। এর প্রস্তুতি শুরু করতেই আজ দিল্লিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কেন্দ্র-রাজ্য বিভাগের অতিরিক্ত সচিব অনন্তকুমার সিংহের সঙ্গে বৈঠক করেন পশ্চিমবঙ্গের স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়। পঞ্চায়েতি রাজ মন্ত্রকের শীর্ষ কর্তারাও হাজির ছিলেন। কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে বিষয়টি আলোচনা চূড়ান্ত হলে এ বিষয়ে নোট তৈরি করে তা কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আলোচনার জন্য পাঠানো হবে। আজ মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেন, “ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থা চালু হলে নিচুতলাতেও উন্নয়নের সুফল পৌঁছবে।”
ঘিসিঙ্গের জমানায় পাহাড়ে দ্বিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থা চালু ছিল। শেষবার ২০০০ সালে শুধুমাত্র গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে নির্বাচন হয়েছিল। ২০০৫ সালে ঘিসিঙ্গ সেই নির্বাচন করতেও রাজি হননি। তাঁর যুক্তি ছিল, যতদিন না দার্জিলিং পার্বত্য এলাকার ষষ্ঠ তফসিলে অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি চূড়ান্ত হবে, ততদিন নির্বাচন হতে পারে না। মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ এখন দ্রুত নির্বাচন চাইছেন। কিছু দিন আগে তিনি বলেছেন, ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থা চালু না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা দ্বিস্তরীয় নির্বাচন, অর্থাত্ গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিরই নির্বাচন হোক।