অনীত থাপা।
দার্জিলিং, কার্শিয়াঙের পর এ বার কালিম্পং। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার প্রতিষ্ঠা দিবস পালিত হবে কালিম্পঙে। রবিবার দলের সভাপতি তথা জিটিএ প্রধান অনীত থাপা ঘোষণা করেন, এ বারের প্রতিষ্ঠা দিবস থেকে মূলত পাহাড়ের শান্তি, সুরক্ষা এবং উন্নয়নের বার্তা দেওয়া হচ্ছে। তবে এ বার কালিম্পং কেন, সেই প্রশ্ন দলের অন্দরে ঘুরপাক খাওয়া শুরু হয়েছে। দলীয় ভাবে বলা হচ্ছে, ২০২১ সালে দার্জিলিং শহরে দলের প্রতিষ্ঠা হয়। ২০২২ সালে প্রতিষ্ঠা দিবস কার্শিয়াঙে পালন করা হয়েছিল। ২০২৩ সালের প্রতিষ্ঠা দিবস কালিম্পঙে হচ্ছে। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে পাহাড়ের সব জায়গাতেই দলের অনুষ্ঠান করা হচ্ছে।
দলীয় সূত্রের খবর, পাহাড়ে দার্জিলিঙের তুলনায় কালিম্পঙে আরএসএস বা সঙ্ঘের সক্রিয়তা অনেকটাই বেশি। পাহাড়ে একমাত্র সঙ্ঘের ‘নিবাস’ এবং সাংগঠনিক প্রশাসনিক বন্দোবস্ত কালিম্পঙেই রয়েছে। তাতে বিজেপির তরফেও গত কয়েকমাসে কালিম্পঙের দলের নানা বৈঠক, সভা ও সমিতি হয়েছে। কিছুদিন আগে বিজেপির রাজ্যের অন্যতম নেতা তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ কালিম্পঙে গিয়ে পাহাড়ের দলীয় বৈঠক করেন। এর বাইরে দলের সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্তরা প্রায়ই দার্জিলিং ও কালিম্পং যাচ্ছেন। সেই জায়গা থেকেই আগামী ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে পাল্টা ময়দানে অনীত থাপা, রূদেন সাদা লেপচারা। তাই বিশেষ ভাবে কালিম্পং শহরকে এ বার প্রতিষ্ঠা দিবসের জন্য বাছাই করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
অনীত অবশ্য বলেছেন, ‘‘লোকসভা ভোটের জন্য এখনও প্রস্তুতির সময় রয়েছে। তবে বিজেপির শেষের শুরু হয়ে গিয়েছে। পাহাড়ে সর্বত্র গোর্খাদের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ১৫ বছর বিজেপি কী করল তা মানুষ দেখছে, বুঝছে।’’ তিনি জানান, ২০০৯ সালে দার্জিলিং লোকসভা আসন জিতেই রাজ্যে বিজেপির জয়যাত্রা শুরু হয়েছিল। এ বার জিটিএ, পঞ্চায়েতে হারের পর হার থেকে বিজেপির শেষের শুরু হয়েছে। বাকিটা ২০২৪ সালের ভোটে করা হবে।
প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার নেতারা জানান, গত বিধানসভা ভোটে কালিম্পং আসনে দলীয় প্রার্থী রূদেন সাদা লেপচা জিতেছেন। পঞ্চায়েত ভোটে বেশির ভাগ গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ডা পাহাড়ে শাসক দলই দখল করেছে। দার্জিলিং পুরসভা, জিটিএ-ও দলের দখলে রয়েছে। কিন্তু বিজেপি বিরোধী হামরো পার্টি, জনমুক্তি মোর্চা, সিপিআরএম এূবং জিএনএলএফকে নিয়ে জোট বানিয়ে ভোটে জেতার চেষ্টা শুরু করেছে। পঞ্চায়েত ভোটে এক দফায় জোটের পরীক্ষা হয়েছে। নড়বড়ে জোট ভোটের বাক্সে প্রভাব ফেলতে না পারলেও লোকসভাতেও ফের এমন চেষ্টা হতে পারে। আবার চা বাগানে পাট্টা নিয়ে শ্রমিকদের ভুল বোঝানোর চেষ্টা চলছে। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা জানান, মানুষকে বিভ্রান্ত করার রাজনীতি শুরু হয়ে গিয়েছে। তাই পাহাড়ের সব জায়গায় দলীয়ভাবে নজর রাখা হচ্ছে। গেরুয়া শিবিরে বা সঙ্ঘের ঘরের পাশেই তাই এবার প্রতিষ্ঠা দিবস হতে চলেছে।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সাল থেকে বিজেপি পাহাড়ের লোকসভা আসনটি জিতে চলেছে। পর পর তিনবার তাঁদের সাংসদ হয়েছে। বর্তমান সাংসদ রাজু বিস্তাকে লক্ষ্য করেই শাসক দলের প্রচার শুরু হয়েছে।