দেওয়া হচ্ছে স্লিপ। নিজস্ব চিত্র।
বাজারে কেনাকাটা চলছে। তবে টাকার বদলে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে স্লিপ নিয়ে। শুক্রবারও কোচবিহারের ভেটাগুড়িতে পাইকারি সব্জি হাটে ব্যবহার হল সেই ‘স্লিপ’।
নোট বাতিলের ঘোষণার পর থেকেই কেনাকাটার অসুবিধে এড়াতে কোচবিহারের ভেটাগুড়িতে এই ‘স্লিপ’-দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। পাইকারি ব্যবসায়ী ভূষণ চাকলাদার বলেন, “পাঁচশো, হাজারের নোট বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে কিছুটা সমস্যা হয়েছে। কিন্তু কৃষকরা সহযোগিতা করছেন।’’ কৃষকরা স্লিপ নিয়ে যাচ্ছেন। পরে তাঁরা কৃষকদের টাকা দিয়ে দিচ্ছেন বলে জানান তিনি। ব্রাহ্মণীরচকের কৃষক গফুর আলি মিয়াঁ বলেন, “তিনদিন আগে হাজার টাকার করলা বিক্রি করেছি। সেই টাকা আজ পেলাম।’’ হাটে হাটে সব্জি বিক্রি করে সংসার চালানো গফুর মিঁয়া জানান, টাকা বাকি থেকে যাওয়ায় অসুবিধেয় পড়তে হচ্ছে। বাসন্তীর হাটের কৃষক নিরঞ্জন বর্মন চার বিঘা জমিতে করলা, ফুলকপি চাষ করেন। হাটের দিন ভোর ৪টায় খেত থেকে সব্জি তুলে ভ্যানে করে তা হাটে নিয়ে যান। গত কয়েকদিন ধরে তিনি ভেটাগুড়ি, কৃষিমেলা বাজার, দেওয়ানহাটে করলা ও ফুলকপি বিক্রি করেছেন। তাতে দশ হাজার টাকার উপরে বাকি পড়ে রয়েছে বলে জানান তিনি। এ দিনও ভেটাগুড়ি বাজারে ফুলকপি নিয়ে যান তিনি। সেই বিক্রির টাকার একটি অংশও বাকিতে রয়েছে বলে হতাশা প্রকাশ করেছেন তিনি। সব্জি বিক্রির পরে এক মহাজনের কাছ থেকে আগে বাকি থাকা চার হাজার টাকা নিয়ে বাড়ি ফেরেন তিনি। তিনি বলেন, “বিক্রি করে হাতে টাকা না পেলে অসুবিধে হয়। চাষের কাজ করা, সংসার চালানো সবই বাকিতে পরে যায়।’’ গত কয়েকদিন ধরে জিনিসের দাম পড়ে গিয়েছে বলেও তাঁর অভিযোগ।
রুইয়েরকুঠির আরেক ব্যবসায়ী জানান, তিনি করলা, আলু, লঙ্কা, বেগুন চাষ করেন। তাঁকেও এ দিন স্লিপ নিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়। তাঁর দাবি, গত ক’দিনে সব্জির দাম তলানিতে নেমেছে। তিনি বলেন, ‘‘বেগুন ৪-৫ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে হচ্ছে। আলু ও করলারও দাম কমেছে।’’ দাম কমা ও পাওনা বাকি থেকে যাওয়া, এই জোড়া সমস্যায় এখন জেরবার চাষিরা।