অশোক ভট্টাচার্য। —ফাইল ছবি
আগামী মে মাসে মেয়াদ শেষ হচ্ছে বর্তমান শিলিগুড়ি পুর বোর্ডের। তার আগে শহরে প্রায় ৯০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ সারতে পাঁচ মাসের অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করলেন পুর কর্তৃপক্ষ। দ্বিতীয় বৈদ্যুতিক চুল্লি, সেতু, রাস্তা সংযোগের মতো অনেক কাজ হবে বলে পুর কর্তৃপক্ষের দাবি। মার্চের মধ্যে কাজগুলো শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাঁচ মাসের ওই অ্যাকশন প্ল্যানে মেয়র পারিষদ এবং আধিকারিকদের মধ্যে ভাগ করে বিভিন্ন কাজ তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে কাজ শেষ করতে যাতে কোনও ভাবেই বিলম্ব না হয় তা দেখতে বলা হয়েছে।
মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘পাঁচ মাসের অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করা হয়েছে। দ্রুতর সঙ্গে কাজ শেষ করতে হবে। সে জন্য আধিকারিক, বাস্তুকার, মেয়র পারিষদদের দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। প্রতি ১৫ দিন পর কাজের অগ্রগতি নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠক হবে।’’
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা, রাজ্য সরকারের তরফে আর্থিক সহায়তা শুরুর দিকে মেলেনি। তা নিয়ে বরাবর সরব হন মেয়র। মুখ্যমন্ত্রী, পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের কাছে অনেক চিঠি লিখেছেন। টাকা না পেলেও তাঁরা যে শহরের বাসিন্দাদের উন্নয়ন কাজে সচেষ্ট সেই বার্তা দিতে চেয়েছেন। কিন্তু শুধু কথায় চিড়ে ভেজার নয়। তাই ভোটের দামামা বাজার আগেই বেশ কিছু প্রকল্পের কাজ করে সবার সামনে তুলে ধরতে চাইছে বাম পরিচালিত বর্তমান পুরবোর্ড। তবে হাতে সময় খুবই কম। তাই রীতি মতো অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করতে উদ্যোগী পুর কর্তৃপক্ষ। গত ১৯ অক্টোবর মেয়র পারিষদের বৈঠকে তা নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
যে কাজগুলো করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে কিরণচন্দ্র শ্মশানে আরও একটি বৈদ্যুতিক চুল্লি তৈরি। এই দাবি বাসিন্দাদের অনেক দিনের। বর্তমানে দু’টি চুল্লির একটি চালু রয়েছে। অপরটি বিকল্প হিসাবে বন্ধ করে রাখা হয়। যাতে চালু চুল্লি কোনও কারণে বন্ধ হলে প্রিয়জনদের সৎকার করতে এসে বাসিন্দাদের দুর্ভোগে পড়তে না হয়। তবে একটি চুল্লির জন্য অনেক সময়ই লাইন পড়ে যায়। এ ছাড়া ২২ কোটি টাকা খরচে বিভিন্ন রাস্তা তৈরি এবং সংস্কার করে রোড নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হবে। নদীর পাড় সৌন্দর্যায়ন হবে গ্রিন সিটি মিশন প্রকল্পে। ১০ কোটি টাকা তাতে খরচ হবে। সুডার তরফে ১০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হচ্ছে। তা নিয়ে ছোট প্রেক্ষাগৃহ বিদ্যাসাগর মঞ্চ গড়া হবে। পানীয় জল সরবরাহের বিকল্প ব্যবস্থা করতে গভীর নলকূপ বসানো হবে বিভিন্ন জায়গায়। পুরনো পথবাতির বদলে ৬ কোটি টাকায় লেড আলো শহরে লাগানো হবে। রাজ্য সরকার ওই টাকা দিচ্ছে। পুরসভার নিজস্ব তহবিল থেকে ২৫ কোট টাকা খরচ করা হবে। কলকাতায় পুরসভার অতিথি নিবাসের আরেকটি ভবন হবে। তৈরি হবে সেতু। বিধায়ক, সাংসদদের তহবিল থেকে ৯ কোটি টাকার অর্থ সাহায্য মিলছে।