আহত ফেলু শেখ। — নিজস্ব চিত্র
এক রাতে মালদহে তিনটি গুলিকাণ্ড। একজনের মৃত্যু হল, জখম হলেন দুজন। আহতদের একজনকে জেলা সদরেরই একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যজনের আঘাত গুরুতর থাকায় তাঁকে কলকাতায় রেফার করা হয়েছে। রবিবার রাতে ইংরেজবাজার শহর সহ জেলার পৃথক তিন থানা এলাকায় তিনটি গুলিকাণ্ডে জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
রবিবার রাত দশটা নাগাদ ইংরেজবাজার শহরের জনবহুল মহেশমাটি এলাকায় মদের আসরে এক যুবককে গুলি করে খুনের ঘটনা ঘটে। অভিযোগ, ওই ঘটনায় যে যুবক মারা গিয়েছেন তিনিও বহিরাগত এবং যাঁর বিরুদ্ধে গুলি করে খুনের অভিযোগ রয়েছে সেও বহিরাগত. এলাকাবাসীর অভিযোগ, বহিরাগত দুষ্কৃতীরা এসে এলাকায় অবাধে মদের ঠেক বসাচ্ছে, গুলি করছে। অথচ পুলিশ নিষ্ক্রিয়। পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, এই ঘটনায় এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। যদিও মূল অভিযুক্ত কিন্তু অধরা।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম টিংকু শেখ (২৭)। তার বাড়ি পুরাতন মালদহের মির্জাপুর গ্রামে। রবিবার রাতে মহেশমাটি এলাকায় মদের আসরে, কালিয়াচকের বাসিন্দা সায়ুম শেখের সঙ্গে টিঙ্কুর বচসা শুরু হয়। এবং তারপরই সায়ুম টিঙ্কুকে গুলি করে পালিয়ে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দারাই টিঙ্কুকে উদ্ধার করে মালদহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে। ওই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিষেক মোদি ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন।
রবিবার রাতেই বৈষ্ণবনগর থানার ভগবানপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ছোট কামাত গ্রামে. দু’পক্ষের মধ্যে গুলির লড়াই শুরু হয় বলে অভিযোগ। এলাকার এক কিশোর গুলিবিদ্ধ হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জখম কিশোরের নাম আব্দুস সালাম। বয়স ১৬ বছর। তার পায়ে গুলি লাগে। তাকে প্রথমে মালদহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় গভীর রাতে তাকে কলকাতায় পাঠানো হয়।
কালিয়াচক থানার হামিদপুর পঞ্চায়েতের তোফি গ্রামে গুলিবিদ্ধ ব্যক্তির নাম ফেলু শেখ। বছর ৪৫ এর ওই ব্যক্তি পেশায় কৃষক। তাকে ইংরেজবাজার শহরের একটি নার্সিংহোমে ভরতি করা হয়। অভিযোগ, রবিবার রাতে তিনি যখন বাড়ি ফিরছিল তখন কেউ তাকে লক্ষ করে গুলি করে।
পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শহরের মহেশমাটির ঘটনাটি মদের আসরে গোলমালের জেরে হয়েছে। একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বৈষ্ণবনগরের ঘটনাটিতে যে কিশোর গুলিবিদ্ধ হয়েছে সেও এলাকায় চলা গোলমালে জড়িত বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে। আর কালিয়াচক থানা এলাকায় যিনি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন তার কাছেই সম্ভবত আগ্নেয়াস্ত্রটি ছিল। সেটি থেকেই গুলি বেরিয়ে তার নিজের পায়েই লাগে।