নিয়োগ প্রক্রিয়া সরল করা হয়েছিল। প্রাইভেট প্র্যাক্টিসের ক্ষেত্রে দেওয়া হয়েছিল অতিরক্ত ছাড় ও সুবিধাও। তবু প্রয়োজনীয় আবেদন এল না চিকিৎসকদের কাছ থেকে।
এ দিকে সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল তৈরি হয়ে গিয়েছে। অথচ চিকিৎসকদের অভাবে তা চালু করা যাচ্ছে না পুরোপুরি। দ্রুত এই অভাব মেটাতে বিশেষজ্ঞ ও সাধারণ চিকিৎসক মিলিয়ে ১৭টি শূন্যপদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল উত্তর দিনাজপুর জেলা স্বাস্থ্য দফতর। তার জন্য বুধ এবং শুক্রবার রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ায় জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরে দু’দফায় ডাকা ওয়াক ইন ইন্টারভিউতে এলেনই মাত্র ৩ জন চিকিত্সক। ফলে তাঁদের মধ্যে বাছাইয়ের আর কোনও সুযোগ ছিল না। আবেদনকারী তিন জন চিকিত্সককেই নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিতে হয় আধিকারিকদের।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ওই তিন চিকিত্সকের বয়স ২৮ থেকে ৩২ বছরের মধ্যে। তাঁদের সকলেরই বাড়ি জেলার ইসলামপুর মহকুমার বিভিন্ন এলাকায়। তাঁদের মধ্যে এক জন প্রসূতি রোগ বিশেষজ্ঞ ও দু’জন সাধারণ রোগের চিকিত্সকের শূন্যপদে আবেদন করেছিলেন।
মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধার দাবি, ‘‘পর্যাপ্ত চিকিত্সক চেয়েও পেলাম না। সমস্যা যে মিটল না, সে কথা রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরকে জানিয়ে তাদের হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়েছে।’’
রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে বর্তমানে ৪৫ জন চিকিত্সক রয়েছেন। তাঁরাই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে জেলা হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড, বহির্বিভাগ ও রায়গঞ্জ সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিত্সা করেন। চিকিত্সকের অভাবে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার তিন মাস পেরিয়ে গেলেও সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের ইনডোর বিভাগ চালু করতে পারেনি স্বাস্থ্য দফতর। ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালেও ১০ জন চিকিত্সকের অভাব রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে জেলায় স্বাস্থ্য পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে প্রায় দু’মাস আগে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে ৩০ জন চিকিত্সক চেয়ে প্রস্তাব পাঠায় জেলা স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের হাতেও অতিরিক্ত চিকিত্সক না থাকায় সেই প্রস্তাব খারিজ হয়ে যায়। এর পরই রাজ্যের অনুমতি নিয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতর ৬ জন বিশেষজ্ঞ ও ১১ জন সাধারণ চিকিত্সক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করে। নামমাত্র ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে যাতে সহজেই চিকিত্সক নিয়োগ সম্ভব হয়, তার জন্য চিকিত্সকদের বয়সের ঊর্ধ্বসীমা ৬০ থেকে ৬৫ বছর পর্যন্ত রাখা হয়। বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক নিয়োগের ক্ষেত্রে বয়সেরও কোনও সীমাও রাখা হয়নি।
স্বাস্থ্য দফতর জানায়, শুধু তাই নয়, নিযুক্ত চিকিৎসকদের ভবিষ্যতে ছাঁটাই না করার শর্ত দেওয়া হয়, এমনকী তাঁদের প্রাইভেট প্র্যাক্টিসের ক্ষেত্রেও কোনও বিধিনিষেধ রাখা হয়নি। এত কিছু সত্ত্বেও চিকিত্সক না মেলায় উদ্বিগ্ন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। এখন কবে কী প্রক্রিয়ায় জেলায় চিকিত্সকের সঙ্কট মেটে, সেটাই দেখার।