প্রতীকী ছবি।
কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শনিবার বীরপাড়া উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে কাজে যোগ দিলেন না প্রধান শিক্ষিকা শান্তা মণ্ডল। ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন শিলিগুড়ির শ্রীগুরু বিদ্যামন্দিরের সহকারী প্রধান শিক্ষক প্রসূনসুন্দর তরফদার। তাঁর আইনজীবী এক্রামুল বারি এ দিন জানিয়েছেন, তাঁর কাছে মামলার কাগজপত্র চেয়ে এ দিন ফোন করেছিলেন সিবিআই আধিকারিকেরা। তিনি তা কাগজ পাঠিয়েও দিয়েছেন।
ওই প্রধান শিক্ষিকার আইনজীবীর তরফে শুক্রবারেই জানানো হয়েছিল, তিনি অসুস্থ। যে স্কুল থেকে শান্তাকে তাঁর পুরনো স্কুলে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সেই শিলিগুড়ির শ্রীগুরু বিদ্যা মন্দিরের পরিচালন সমিতির সভাপতি আশিস দত্ত এ দিন জানিয়েছেন, অসুস্থতার কারণে সাত দিনের ছুটি চেয়ে গত বৃহস্পতিবার তাঁকে ‘হোয়াটসঅ্যাপ’ করেছেন শান্তা। কিন্তু ছুটির ব্যাপারে তাঁর থেকে লিখিত কোনও আবেদন পাননি তিনি।
গত বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে বদলি নিয়ে জোড়া মামলায় শুনানিতে সিবিআই-তদন্তের নির্দেশের পাশাপাশি, ওই প্রধান শিক্ষিকাকে শনিবারের মধ্যে পুরনো স্কুল বীরপাড়া উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে কাজে যোগ দিতে বলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ফলে, এ দিন স্কুল শুরুর সময় থেকে তাঁর জন্য শুরু হয় অপেক্ষা। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকা নিতা বিশ্বাস-সহ অন্য শিক্ষিকাদের পাশাপাশি, স্কুলে যান পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা মাদারিহাটের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক যোগেন তামাং ও সমিতির সরকার মনোনীত দুই সদস্য। শনিবার হওয়ায় এ দিন দেড়টায় স্কুলের ক্লাস শেষ হয়ে যায়। তার পরে ছাত্রীদের মিড-ডে মিল দেওয়া শেষ করেও দুপুর ২টা ১০মিনিট পর্যন্ত স্কুলেই থেকে যান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা-সহ কয়েক জন। থাকেন পরিচালন সমিতির দুই সদস্যও। শান্তা তখনও না আসায়, তার পরে তাঁরা স্কুল ছাড়েন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম, উনি এ দিন স্কুলে এসে কাজে যোগ দেবেন। কিন্তু আসেননি। ওঁর সঙ্গে আমাদের কোনও যোগাযোগও হয়নি।”
প্রধান শিক্ষিকা অসুস্থ বলে শুক্রবারই জানিয়েছিলেন তাঁর আইনজীবী নিবেদিতা পাল। এ দিন অবশ্য ওই আইনজীবী ব্যস্ততার কথা জানিয়ে এ নিয়ে কোনও কথা বলেননি। তবে শিলিগুড়ি শ্রীগুরু বিদ্যা মন্দিরের পরিচালন সমিতির সভাপতি আশিস মিত্র বলেন, ‘‘আদালতে শান্তার দায়ের করা একটি মামলার রায় হয় গত ২৯ জুন। তাতে শান্তাকে শ্রীগুরু বিদ্যা মন্দিরে ‘প্রবেশনারি’ যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সে ভিত্তিতে স্কুল কর্তৃপক্ষ যোগদান করায়। কাজেই আমার ছুটি দেওয়ার অনুমতি নেই। গত ৪ অগস্ট রাত ৯টায় শান্তার একটি মেসেজ পাই। তিনি জানান, তাঁর শরীর খারাপ। সাত দিনের ছুটি চাই। কিন্তু লিখিত কোনও আবেদন করেননি। ’’
আইনজীবীদের একাংশ মনে করছেন, আদালতের নির্ধারিত সময়ে স্কুলে যোগ না দেওয়ার ‘ব্রেক অব সার্ভিস’ হতে পারে ওই শিক্ষিকার। পর্ষদের অনলাইন বেতন ব্যবস্থাপনা বিভাগের এক কর্তা সামসুল আলম বলেন, ‘‘ব্রেক অব সার্ভিসের পরে, যদি কেউ আবার কাজে যোগ দেন, তা হলে ধরতে হবে সে দিন থেকেই তিনি চাকরিতে যোগ দিলেন। আগের চাকরি জীবনের বর্ধিত বেতন পাবেন না। পেনশনের ক্ষেত্রেও পিছিয়ে পড়বেন।’’