ফাইল চিত্র
এ বারে করোনা সংক্রমণ মিলল শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের এবং উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্যের দেহে। মঙ্গলবার তাঁকে বাড়ির কাছে প্রধাননগরের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছে।
শিলিগুড়ির প্রাক্তন বিধায়ক রুদ্রবাবু নিজেও পেশায় চিকিৎসক। নার্সিংহোম সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁকে অক্সিজেন দিতে হচ্ছে। দলের কাজে কলকাতায় থাকলেও সেখান থেকে রুদ্রবাবুর চিকিৎসার বিস্তারিত খোঁজ নেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। শিলিগুড়িতে সরকারের দু’টি কোভিড হাসপাতাল রয়েছে। তা ছেড়ে কেন রুদ্রবাবু, পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর প্রধান অশোক ভট্টাচার্য বা শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের বিরোধী দলনেতা কাজল ঘোষকে বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে যেতে হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপির নেতারা।
তাঁদের দাবি, এতেই স্পষ্ট, সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা এমন যে সেটার উপরে তাঁরা ভরসা করতে পারছেন না।
বিজেপির দার্জিলিং জেলা সভাপতি প্রবীণ আগরওয়ালের মতে, ‘‘সরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নত করা দরকার। যাতে সকলেই সেখানে যেতে ভরসা পান।’’ তিনি জানান, সম্প্রতি গ্রামেগঞ্জে নানা হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তাঁরা ঘুরেছেন। সেখানে দেখেছেন ৫ জন নার্সের কাজ দু’জন মিলে চালাচ্ছেন। এই লোক কম থাকায় চিকিৎসা ক্ষেত্রেও ঘাটতি হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বেহাল দশা আরও বেশি করে সামনে এসেছে।
শিলিগুড়ি পুরসভার বিদায়ী বিরোধী দলনেতা তথা তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকারের কথায়, ‘‘অনেক ক্ষেত্রে প্রবীণ বাসিন্দারা কোভিড হাসপাতালে যেতে আপত্তি করেন। তাঁরা কোথায় চিকিৎসা করাবেন, সেটা তাঁদের নিজস্ব ব্যাপার। নেতা বলে আলাদা কোনও ছাড় নেই। রুদ্রবাবুর বয়স ৬৮ বছর। সেটাও ভাবতে হবে।’’ রঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘সরকারি হাসপাতালেও একই চিকিৎসা মিলছে। তবে বেসরকারি ক্ষেত্রে হসপিট্যালিটি বা ব্যবস্থাপনা কিছুটা ভাল। বিজেপি নেতাদের কারও যদি এই বিপদের সময়ে পরিষেবা দরকার হয়, তা হলে সে ক্ষেত্রেও যেখানে ভাল চিকিৎসা হবে, সেই জায়গাতেই ব্যবস্থা করা হবে।’’ একই সঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দিল্লির এমসের বদলে গুরুগ্রামের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন কেন?’’
শিলিগুড়ি দু’টি কোভিড হাসপাতাল রয়েছে। সেখানকার চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে গোড়া থেকেই নানা প্রশ্ন উঠেছে। উত্তরবঙ্গের বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক সুশান্ত রায় পরিস্থিতি সামলাতে আট চিকিৎসকের সুপার স্পেশালিটি দল গঠন করেন। আরও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নামের তালিকা তৈরি করা হয়। তার পরেও চিকিৎসা পরিষেবার মান নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গিয়েছে।
দল সূত্রেই জানা গিয়েছে, সম্প্রতি রুদ্রবাবুর নিরাপত্তারক্ষী করোনায় আক্রান্ত হন। এর পরেই রুদ্রবাবু নিজের করোনা পরীক্ষা করান। এদিন রিপোর্ট মেলে। প্রায় দু’দশক আগে তাঁর বাইপাস সার্জারি হয়েছে। সম্প্রতি তিনি হৃদরোগেও আক্রান্ত হয়েছিলেন।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)