গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
মালদহ মেডিক্যাল কলেজে বৃহস্পতিবার যোগদান করতে এসে পড়ুয়াদের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন আরজি করে নির্যাতিত চিকিৎসকের বিভাগীয় প্রধান অরুণাভ দত্ত চৌধুরী। তাঁকে হাসপাতালে যোগদান করানো যাবে না বলে দাবি তুলেছেন পড়ুয়ারা। অধ্যক্ষ জানিয়েছেন, এই বিষয়ে পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি। হাসপাতালে রিপোর্ট করেছেন অরুণাভ। সরকারি ভাবে যোগদান করেছেন কি না, এখনও জানেন না তিনি।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগ ওঠার পর পড়ুয়ারা প্রশাসনিক শীর্ষ পদাধিকারীদের সরানোর দাবি তুলেছিলেন। সেই তালিকায় ছিলেন অরুণাভও। পড়ুয়াদের সেই দাবি মেনে নেয় স্বাস্থ্যভবন। তার পরেই মালদহ মেডিক্যাল কলেজে বদলি করা হয় আরজি করের চেস্ট মেডিসিন বিভাগের প্রাক্তন প্রধানকে। তখনই সেখানকার পড়ুয়াদের একাংশ জানিয়ে দিয়েছিলেন, আরজি করের চিকিৎসককে তাঁরা কলেজে যোগ দিতে দেবেন না। এই আবহে গত বৃহস্পতিবার, ২২ অগস্ট কথা থাকলেও তিনি নতুন কাজে যোগ দেননি। বৃহস্পতিবার, ২৯ অগস্ট তিনি সেখানে যোগ দিতে গেলে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছেন সেখানকার পড়ুয়ারা। অরুণাভকে ঘিরে ধরেন তাঁরা। এর পরেই অধ্যক্ষের ঘরে ঢুকে যান চিকিৎসক। প্রশ্ন উঠেছে, বিক্ষোভের মাঝে তিনি কি আদৌ যোগদান করতে পেরেছেন? এই প্রসঙ্গে মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অরুণাভ কলেজে যোগদানের আবেদন করেছেন। তিনি অর্ডার সঙ্গে নিয়ে এসে রিপোর্ট করেছেন। সরকারি ভাবে যোগদান করেছেন কি না, দেখছি। আমি বৈঠকে ছিলাম।’’ তার পরেই তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা নিয়ম মেনে সব কিছু করব। পড়ুয়াদের সঙ্গেও কথা বলব। ৩টের সময় কলেজ কাউন্সিল বৈঠক রয়েছে। অবশ্যই শুনব পড়ুয়াদের কথা।’’
২১ অগস্ট সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্স থেকে মিছিল করে স্বাস্থ্য ভবন গিয়েছিলেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকেরা। সেখানে নিজেদের দাবিদাওয়া জানিয়ে এসেছিলেন তাঁরা। সেই দাবি মেনে ওই দিন রাতেই আরজি করের নতুন অধ্যক্ষ, নতুন সুপার, অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার এবং চেস্ট মেডিসিন বিভাগের প্রধানকে সরিয়ে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে সন্দীপ ঘোষকে ন্যাশনাল মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পদ থেকেও সরানো হয়েছিল। তার পরেই আরজি কর হাসপাতালে চেস্ট মেডিসিন বিভাগের প্রাক্তন প্রধান অরুণাভকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজে বদলি করা হয়। এর আগে তাঁকে সিজিও দফতরে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল সিবিআই। ৯ অগস্ট খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে তিনি পৌঁছনোর পর থেকে কী হয়েছিল, তা তদন্তকারীদের সবিস্তার জানিয়েছিলেন। তবে তিনি বলেছিলেন, ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও ওই মহিলা চিকিৎসকের দেহের দিকে তাকাতে পারেননি।
সন্দীপকে সরিয়ে আরজি করের অধ্যক্ষ পদে বসানো হয়েছি সুহৃতা পালকে। পরে পড়ুয়াদের বিক্ষোভের পরে তাঁকেও সরিয়ে দেয় স্বাস্থ্য ভবন। সেই সুহৃতাও নতুন কর্মক্ষেত্রে যোগদান করতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন। বিক্ষোভের মধ্যে বারাসত মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পদে যোগ দিয়েছিলেন তিনি।