ফিরিয়ে দিন বাবার নাম, দাবি

ছিটমহলের বাসিন্দারা তাই তাঁদের সন্তানদের কোনও ভারতীয় নাগরিকের সন্তান বলে স্কুলে পরিচয় দিতেন। সেই পরিচয়ই থেকে যেত। এ বার রহমান আলি নামে এক ছাত্র দাবি করলেন, ‘‘আমার পিতৃপরিচয় ফিরিয়ে দেওয়া হোক।’’

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৭:৫০
Share:

ছিটমহল বিনিময়ের আগের কথা। তখন ভারতের স্কুলে পড়াশোনা করতে গেলে ভারতের কোনও বাসিন্দার সন্তান বলে নিজের পরিচয় দিতে হত। ছিটমহলের বাসিন্দারা তাই তাঁদের সন্তানদের কোনও ভারতীয় নাগরিকের সন্তান বলে স্কুলে পরিচয় দিতেন। সেই পরিচয়ই থেকে যেত। এ বার রহমান আলি নামে এক ছাত্র দাবি করলেন, ‘‘আমার পিতৃপরিচয় ফিরিয়ে দেওয়া হোক।’’ উচ্চশিক্ষা দফতর থেকে শুরু করে জেলার প্রশাসনিক আধিকারিকদের কাছে আবেদন জানিয়েছেন রহমান। ছিটমহল আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত বিজেপি নেতা দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বলেন, “প্রচুর ছাত্রছাত্রী একই সমস্যায় ভুগছে। কেন এর সমাধান করা হচ্ছে না, বুঝতে পারছি না।”

Advertisement

স্নাতকোত্তরের ছাত্র রহমানের বাড়ি সাবেক ছিটমহলের পোয়াতুরকুঠিতে। তাঁর কথায়, “এখন তো কোনও বাধা নেই। ছিটমহল বিনিময়ের দুই বছর পার হয়ে গিয়েছে। আমাদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল আমরা আসল পরিচয় পাব। কিন্তু কবে তা হবে?”

রহমান জানায়, ছোটবেলায় প্রাথমিকে ভর্তির সময় থেকেই তাঁদের সমস্যায় পড়তে হয়। তাঁর বাবার নাম নস্কর আলি। কিন্তু নস্কর আলি ছিটমহলের বাসিন্দা। তাই পাশের ভারতীয় গ্রাম কাটামারির সাহের আলিকে রহমানের বাবা বলে পরিচয় দেওয়া হয় স্কুলে। সেই পরিচয় নিয়ে রহমান মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক স্তরের পড়াশোনা শেষ করেন। রহমান বলেন, “আর কোনও উপায় ছিল না। পড়াশোনা শেখার জন্যে আমরা অনেকই পাশের ভারতীয় গ্রামের আত্মীয়ের সাহায্য নিয়েছিলাম।”

Advertisement

২০১৫ সালের ৩১ জুলাই ছিটমহল বিনিময় হয়। সেই সময় ওই সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে। আদতে তা হয়নি। গত ৫ সেপ্টেম্বর সমস্ত বিষয় আবারও তুলে ধরে উচ্চশিক্ষা দফতরের সহকারী সচিব, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সহ প্রশাসনিক সমস্ত জায়গায় লিখিত ভাবে আবেদন করেন রহমান। চৌধুরীহাট বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরের প্রধানশিক্ষক জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের স্কুলে সাবেক ছিটমহলের অনেকেই পড়াশোনা করছে। অনেকেই পাশ করেছে। আগামীদিনে ওই পরিচয় তাঁদের সমস্যা হতে পারে। তাই তা সমাধানের কথা জানিয়ে স্কুল শিক্ষা দফতরের কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছেন।” প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement