ছবি: সংগৃহীত।
উচ্ছেদের নোটিস ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল শিলিগুড়ি মহকুমার নকশালবাড়ি ব্লকে। ওই ব্লকের হাতিঘিসা এলাকার সংরক্ষিত বনাঞ্চলে বাড়ি করে থাকা ৪৪টি পরিবারকে উচ্ছেদের নোটিস দেওয়া হয়েছে। ২৩ জুলাই বন দফতরের তরফে ওই বাসিন্দাদের নোটিস পাঠান হয়েছিল। আজ, বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টার মধ্যে এলাকা খালি করতে বলা হয়েছে।
বন দফতরের দাবি, বাগডোগরা রেঞ্জের লালফা ব্লকের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মধ্যে ওই বাড়িগুলো তৈরি করেছে। বাসিন্দারা তা না সরালে বন দফতরের তরফে সেগুলো ভেঙে দেওয়া হতে পারে। সেই কাজে বাধা দিলে গ্রেফতারের কথাও নোটিসে জানান হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পরিবারগুলো তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবের দ্বারস্থ হয়েছে।
সরকারি সূত্রের খবর, মন্ত্রী প্রশাসনিক স্তর ছাড়াও বন দফতরের বিভিন্ন মহলে কথা বলেছেন। মন্ত্রী বলেন, ‘‘প্রায় তিন দশক ধরে পরিবারগুলো ওই এলাকায় রয়েছে। আমি অফিসারদের সঙ্গে কথা বলেছি। আলোচনার মাধ্যমে কী ব্যবস্থা করা যায় তা দেখা হচ্ছে।’’
এলাকাটি নকশালবাড়িগামী এশিয়ান হাইওয়ে-২ এর পাশে কিরণচন্দ্র চা বাগানের পিছনের অংশে রয়েছে। হাতিঘিসা গ্রাম পঞ্চায়েতের নন্দলাল গ্রাম বলে এলাকাটি পরিচিত। মূলত আদিবাসী এবং নেপালি ভাষাভাষি মানুষের বসবাস গ্রামে।
সেখানকার বাসিন্দা মানু রাই জানান, তাঁরা ১৯৮০ সাল থেকে এখানেই স্থায়ীভাবে রয়েছেন। সকলেরই ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, জব কার্ড রয়েছে। একই দাবি বাসিন্দা ভরত প্রধান, সোনিয়া ওরাওঁ বা ভীমবাহাদুর মাঝিদের। ওই এলাকায় পঞ্চায়েত থেকে রাস্তা, নর্দমা, বিদ্যুতের ব্যবস্থা হয়েছে। চা বাগান এবং লাগোয়া এলাকায় নানা জায়গায় ওই বাসিন্দারা কাজ করেন।
উচ্ছেদ হলে পথে বসা ছাড়া উপায় থাকবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তাঁরা। পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়িয়েছেন নকশালবাড়ি ব্লকের তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি গৌতম কীত্তর্নীয়া। তিনি বলেন, ‘‘আমি মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছি। পরিবারের কিছু লোকজনও ছিলেন। মন্ত্রী বন দফতরের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।’’ তিনি জানান, ওই বাসিন্দাদের স্থায়ী বসবাসের জন্য পাট্টার ব্যবস্থা প্রয়োজন।
বন দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, সরকারি নিয়ম ভেঙে ওই বাসিন্দারা সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মধ্যে ধীরে ধীরে ঢুকে পড়ছিলেন। তাই তাঁদের উঠে যাওয়ার কথা বলা হয়েছিল। বন দফতরের কার্শিয়াং বন বিভাগের এক আধিকারিক জানান, মন্ত্রীর সঙ্গে বিষয়টি আলোচনা হয়েছে। কী করা যায় তা দেখা হচ্ছে।