— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
রাজ্যের পার্বত্য এলাকার জন্য আঞ্চলিক স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) তৈরি করা হল। গত বুধবার রাজ্যের শিক্ষা দফতরের তরফে যুগ্ম সচিবের তরফে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। পাহাড়বাসীর দীর্ঘদিনের দাবি মেনে দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড়ের জন্য আলাদা ভাবে এই কমিশন কাজ করবে। কালিম্পঙের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বিজয়কুমার রাইকে কমিশনের চেয়ারম্যান করা হয়েছে। মোট সাত সদস্যের কমিটি আগামী ২০২৮ সালের ২৪ জানুয়ারি অবধি কাজ করবে বলে ঘোষণা রাজ্য শিক্ষা দফতরের।
লোকসভা ভোটের আগে শাসক দল, এই খবরকে প্রচারে হাতিয়ার করে বাড়তি সুবিধা পাবে বলে পাহাড়ের নেতারা মনে করছেন। জিটিএ প্রধান অনীত থাপা বলেছেন, ‘‘আমরা পাহাড়বাসীর কাছে যা যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, ধাপে ধাপে তা পালন করছি। পাহাড়ের শিক্ষা ব্যবস্থাকে মজবুত করতে কমিশন কাজ করবে।’’ তিনি জানান, রাজ্য সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে কাজ করে গেলে আখেরে পাহাড়েরই লাভ তা পাহাড়বাসীরা বুঝতে পারছেন। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের পদোন্নতি থেকে স্কুল সার্ভিস কমিশন এর উদাহরণ।
শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, সুবাস ঘিসিং পার্বত্য পরিষদের চেয়ারম্যান থাকাকালীন ১৯৯৯ সালে রাজ্য সরকার পাহাড়ের জন্য আঞ্চলিক স্কুল সার্ভিস কমিশন তৈরি করে। কালিম্পং কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ জিএস ইয়নজনকে চেয়ারম্যান করা হয়। কিন্তু চেয়ারম্যানের সঙ্গে ঘিসিংয়ের বিভিন্ন বিষয়ে মতানৈক্য দেখা দেয় বলে অভিযোগ। চেয়ারম্যান ২০০০ সাল নাগাদ পদত্যাগ করেন। তার পরে ঘিসিং নতুন করে কমিশনকে আর পুনরুজ্জীবিত করেননি বলে অভিযোগ। বিমল গুরুংয়ের আমলেও একাধিকবার কথা হলেও কিছুই হয়নি। ২০২২ সালে জিটিএ ভোটের সময় পাহাড়ের শাসক প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার তরফে কমিশনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিছুদিন আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে অনীত থাপার আলোচনার পরে কমিশন নতুন করে গঠনের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে।
নতুন কমিশনের চেয়ারম্যান আবার দার্জিলিং স্কুল বোর্ডের চেয়ারম্যান পদেও ছিলেন। সেখানে নতুন কারও নাম এখনও ঘোষণা হয়নি। তবে কালিম্পং স্কুল বোর্ডের নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ হয়েছে। কমিশনের চেয়ারম্যান বিজয়কুমার রাইয়ের স্কুলের আর এক শিক্ষক, শেন্ডুপ লামাকে নতুন স্কুল বোর্ড চেয়াম্যান করা হয়েছে। এই পদে ২০২১ সাল থেকে অস্থায়ী ভাবে কাজ করছিলেন কালিম্পঙের প্রাক্তন বিধায়ক হরকা বাহাদুর ছেত্রী। তিনি বলেন, ‘‘পাহাড়ের জন্য স্কুল সার্ভিস কমিশন গঠন সত্যিই ভাল বিষয়। এ বার পাহাড়ের শিক্ষক নিয়োগ থেকে বিভিন্ন কাজকর্ম সুচারু ভাবে হবে। আর স্কুল বোর্ডগুলিও নিজেদের মতো কাজ করবে।’’
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, দার্জিলিং ও কালিম্পং মিলিয়ে পাহাড়ে এক হাজারের মত প্রাথমিক স্কুল হয়েছে। হাইস্কুল সাতশো মতো। জুনিয়র হাইস্কুল তিনশো মতে। সব মিলিয়ে দুই হাডার স্কুলে বর্তমানে কয়েক হাজার শূন্যপদ রয়েছে। এ বার থেকে পাহাড়ের স্কুলের নিয়োগ, পদোন্নতি, পে স্কেল, পেনশন যাবতীয় কাজ কমিশন দেখবে।