—ফাইল চিত্র
চিনে নোভেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ মারাত্মক আকার নেওয়ায় উদ্বেগ ছড়াল উত্তরবঙ্গেও। শনিবার থেকে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে ভারত-নেপাল সীমান্তে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত শুক্রবার নেপালের এক ব্যক্তির এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। তারপরেই জারি হয়েছে সতর্কতা।
নেপাল থেকে শিলিগুড়ি, দার্জিলিঙে নিয়মিত আনাগোনা রয়েছে বাসিন্দাদের। আবার নেপাল ও চিনের মধ্যেও যোগাযোগ রয়েছে। তাই সতর্ক হওয়া জরুরি বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য দফতর থেকে। দিন চারেক আগে একই কারণে বাগডোগরা বিমানবন্দরেও লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সেখানে বাইরে থেকে আসা যাত্রীদের উপর নজরদারি শুরু হয়েছে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ড তৈরির সমস্ত ব্যবস্থা প্রস্তুত করা হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে ‘র্যাপিড রেসপন্স টিম’।
শনিবার থেকে ভারত-নেপাল সীমান্তে শিলিগুড়ি পানিট্যাঙ্কি, মিরিকের পশুপতি, সীমানা, ওকাইটি এলাকাগুলোতে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সেখানে ‘হেল্থ চেক পোস্ট’ আজ, রবিবার থেকে চালু করা হচ্ছে। নেপাল হয়ে কেউ এদিকে এলে তাঁর করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কোনও উপসর্গ রয়েছে কি না তা পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। তারা জানান, করোনা আক্রান্তদের সর্দি, কাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্টের উপসর্গ দেখা দেয়।
চিনে এই ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে দিন চারেক আগেই স্বাস্থ্য দফতর থেকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, দার্জিলিং জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। দার্জিলিং জেলা স্বাস্থ্য দফতর দিন চারেক আগে বাগডোগরা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে। ‘রেড এলার্ট’ জারি করা হয়। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মী-চিকিৎসকরাই প্রাথমিক ভাবে বিষয়টি দেখবেন। করোনার উপসর্গ কোনও যাত্রীর রয়েছে তাঁদের এমন কোনও সন্দেহ হলে তাঁরা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং জেলা স্বাস্থ্য দফতরের সাহায্য নেবেন।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, আইসোলেশন ওয়ার্ডে ৬টি শয্যা আলাদা করে রাখা হচ্ছে কোনও করোনা আক্রান্ত রোগী এলে তাঁদের চিকিৎসার জন্য। সেই সঙ্গে চিকিৎসা ব্যবস্থার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নেতৃত্বে ‘র্যাপিড রেসপন্স টিম’ তৈরি করা হয়েছে। তাতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছাড়াও নোডাল অফিসার, অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা রয়েছেন। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ভাইরোলজি ল্যাবরেটরিতেও অত্যাধুনিক পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে এই ভাইরাস নির্ণয় করার জন্য। প্রয়োজনে বাইরের ল্যাবরেটরিতেও রোগীর দেহরস, থুতুর নমুনা পাঠানোর ব্যবস্থা রয়েছে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার কৌশিক সমাজদার বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ মতো আমরা প্রস্তুত রয়েছি। আইসোলেশন ওয়ার্ডেও সমস্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’