প্রতীকী ছবি
ধর্ষণের মামলা তুলতে রাজি না হওয়ায় এক নাবালিকার পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। পরিস্থিতির জেরে মঙ্গলবার শিলিগুড়ি মহকুমা শাসকের কাছে নিরাপত্তা চেয়ে লিখিত আবেদন করেছেন নাবালিকার বাবা।
ফাঁসিদেওয়া থানার মহম্মদবক্স এলাকার ঘটনা। ছয়মাস আগে ভয় দেখিয়ে ১৪ বছরের মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। বর্তমানে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা। ৫ মাসের বেশি গর্ভবতী। বাড়িতেই আছে। তার পরিবারের সঙ্গে অভিযুক্তের পরিবারের একাধিকবার আলোচনা হয়। বিয়ের কথা বলায় অভিযুক্ত পিছিয়ে আসায় গত ২৩ জানুয়ারি মেয়ের বাড়ির তরফে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়। ১ ফেব্রুয়ারি অভিযুক্ত গ্রেফতার হয়। তার পর মামলা তোলার জন্য ভয়, হুমকি দেখানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। মেয়েটিকে গর্ভপাত করানোর প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।
মেয়েটির বাবা ও মা জানান, প্রাইভেট টিউশন পড়ে ফেরার সময় চা বাগানে মেয়েকে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘‘ছেলেটিকে আমরা চিনি। মেয়ের সঙ্গে মেলামেশা ছিল, বিয়ের কথাও বলেছিল। তা না করে, এখন মেয়েকে গর্ভপাতের কথা বলছে। আমাদের নানা ভাবে মামলা তোলার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। সামজিক বয়কটের হুমকিও রয়েছে। বাধ্য হয়ে আদালতে তো বটেই মহকুমা শাসককে চিঠি দিয়ে সব জানিয়েছি।’’
এই প্রসঙ্গে মহকুমা শাসক ফিরোজ দানেশ্বর বলেন, ‘‘আমার হাতে আবেদনপত্র এসে পৌঁছায়নি। তা দেখে যা যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেব। ব্লক প্রশাসন ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলব।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, মেয়েটি ফাঁসিদেওয়ার একটি স্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়ে। বাবা পেশায় রিকশা চালক। মা প্লাইউড কারখানায় কাজ করেন। মা সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার পর মেয়েটি পাশের পাড়ায় পড়তে যেত। ফেরার সময় অভিযুক্তের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। মেলামেশা ঘনিষ্ঠ স্তরে পৌঁছয়। মেয়েটির অভিযোগ, ফুঁসলে চা বাগানে নিয়ে গিয়ে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল। পরে আবার ধারাল অস্ত্র দেখিয়ে ধর্ষণ করা হয়। মেয়ের মা’র দাবি, ‘‘প্রথমে টের পাইনি। পরে মেয়েকে আতঙ্কে সব বলে ফেলে।’’
পরিবারটির আইনজীবী অখিল বিশ্বাস, কাকলি বিশ্বাসেরা জানান, অভিযুক্ত গ্রেফতার হলেও ছেলের বাবা ও কাকা ভয় দেখাচ্ছে। পুলিশ-প্রশাসনে বিষয়টি জানানো হচ্ছে।
দার্জিলিং জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, মেয়েটির মেডিক্যাল টেস্টা ছাড়াও অভিযুক্তের ডিএনএ পরীক্ষা হয়েছে। তবে নিরাপত্তা অভাব বা হুমকি জানিয়ে কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। আর অভিযুক্তদের পরিবারের এক আত্মীয় জানান, মিথ্যা অভিযোগ তুলে ছমাস পর মামলা করে ফাঁসানোর চক্রান্ত হয়েছে।