হ্যামিলটনগঞ্জের রাস্তায় জল থইথই। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
রাতভর প্রবল বৃষ্টিতে জলমগ্ন আলিপুরদুয়ার জেলার বিভিন্ন এলাকা। প্রবল এই বৃষ্টির জেরে জেলার বিভিন্ন নদীতে জল বাড়তে শুরু করেছে। তিতি, হাউরি ও বাংরি নদীর জল বেড়ে যাওয়ায় মাদারিহাট থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে টোটোপাড়া। আলিপুরদুয়ার-ফালাকাটা সড়কে চরতোর্সা নদীর অন্য খাত দিয়ে এ দিন জল বইতে শুরু করেছে। কালচিনিতে দু’টি চা বাগানের একাংশেও জল জমে গিয়েছে।
সোমবার গভীর রাত থেকেই আলিপুরদুয়ার জেলায় প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়। জেলার বিভিন্ন জায়গায় মঙ্গলবার বেলা পর্যন্ত সেই বৃষ্টি চলেছে। সেচ দফতর সূত্রের খবর, এ দিন সকাল আটটা পর্যন্ত শুধুমাত্র হাসিমারাতে ১৭০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আলিপুরদুয়ারে বৃষ্টি হয়েছে ৩৫ মিলিমিটার। প্রবল বৃষ্টির জেরে কালজানি, তোর্সা, সংকোশ, রায়ডাক-সহ জেলার ছোট-বড় সব নদীর জলই বাড়তে শুরু করে। তবে কোনও নদীর জলই এখনও বিপদসীমা পর্যন্ত পৌঁছয়নি বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
প্রতিবারই বর্ষার সময় তিতি, হাউরি ও বাংরি নদীর জল বেড়ে গেলে বারবার মাদারিহাটের সঙ্গে টোটোপাড়ার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সূত্রের খবর, সোমবার রাত থেকে শুরু হওয়া প্রবল বৃষ্টিতে এ দিন সকাল হওয়ার আগেই ওই নদীগুলি ফুলে ফেঁপে ওঠে। ফলে সকালের দিকে ফের টোটোপাড়া বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান আশা এস বোমজান বলেন, ‘‘দুপুরের পর রোদ ওঠায় পরিস্থিতি কিছুটা ভাল হয়েছে। তবে আরও বৃষ্টি হলে সমস্যা বাড়বে।’’
প্রবল বৃষ্টির জেরে এদিন সকালেই আলিপুরদুয়ার-ফালাকাটা সড়কের উপর চরতোর্সা নদীর অন্য খাতের উপর দিয়ে জল বইতে শুরু করে। ফলে অনেক গাড়ি ঘুরপথে চলাচল শুরু করে। বৃষ্টির জেরে ফালাকাটার গুয়াবরনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত বিরগিটি নদীর বাঁধ ভেঙে গেলে নদীর জল হু হু করে ছাইতানতলা লাগোয়া এলাকার দোকানপাট, ঘরবাড়ির ভিতর ঢুকে পড়ে। ফলে খাটের উপর বেঞ্চ পেতে অনেককে বিছানাপত্র বাঁচাতে দেখা যায়।
এই বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়েছে কালচিনি ব্লকেরও বেশ কিছু এলাকা। সূত্রের খবর, এ দিন সকালেই হাসিমারার ভোলানালা থেকে জল উপচে পড়তে শুরু করে। ফলে ভার্নাবাড়ি ও সাঁতালি চা বাগানের একাংশ জলমগ্ন হয়ে পড়ে। জল ভাসিয়ে নিয়ে যায় হ্যামিল্টনগঞ্জ শ্যামাপ্রসাদ কলোনি, সুভাষ কলোনি ও পাঁচ মোড় এলাকাও। রাস্তা দিয়ে নদীর মতো জল বয়ে গিয়েছে সেখানে। মঙ্গলবার সকালে হ্যামিল্টনগঞ্জ পাঁচমোড় এলাকায় রাজ্য সড়কের উপর দিয়েও জল বইতে থাকে। প্রশাসনের কর্তারা জানিয়েছেন, প্রবল বৃষ্টির জন্য কিছু জায়গায় জল জমেছিল। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।