Raiganj

পথবাতির উদ্বোধনে ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের’ আঁচ

তৃণমূলের অন্দরমহলের খবর, ওই অনুষ্ঠানকে ঘিরে অরুণ ও তাঁর অনুগামীদের সঙ্গে আদেশ ও তাঁর অনুগামীদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে ওঠায় বিতর্ক এড়াতে সন্দীপ ও অরিন্দম ওই অনুষ্ঠানে হাজির হননি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২০ ০৬:২৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

পথবাতি উদ্বোধন ঘিরে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ উঠল। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটে রায়গঞ্জ শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের রবীন্দ্রপল্লিতে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সন্ধ্যায় ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অরুণ চন্দের উদ্যোগে রবীন্দ্রপল্লিতে ১৭টি পথবাতি উদ্বোধনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। রায়গঞ্জ পুরসভার তরফে পথবাতিগুলি বসানো হয়েছে।

অভিযোগ, ওই অনুষ্ঠান ঘিরে এ দিন সকাল থেকে অরুণ ও তাঁর অনুগামীদের সঙ্গে ওই ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা ওয়ার্ডের তৃণমূল আহ্বায়ক আদেশ মাহাতো ও তাঁর অনুগামীদের ‘দ্বন্দ্ব’ শুরু হয়। এলাকাবাসীর একাংশ জানান, দু’পক্ষই পথবাতি বসানোর জন্য পুর-কর্তৃপক্ষকে অভিনন্দন জানিয়ে একাধিক ফ্লেক্স টাঙিয়ে দেয়।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সন্ধ্যায় রবীন্দ্রপল্লির পীযূষ স্মৃতি কালীমন্দিরের সামনে আনুষ্ঠানিক ভাবে পথবাতিগুলি উদ্বোধনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তৃণমূলের পুরপ্রধান সন্দীপ বিশ্বাস ও উপ-পুরপ্রধান অরিন্দম সরকারকে অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে পথবাতিগুলির উদ্বোধন করার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন অরুণ।

তৃণমূলের অন্দরমহলের খবর, ওই অনুষ্ঠানকে ঘিরে অরুণ ও তাঁর অনুগামীদের সঙ্গে আদেশ ও তাঁর অনুগামীদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে ওঠায় বিতর্ক এড়াতে সন্দীপ ও অরিন্দম ওই অনুষ্ঠানে হাজির হননি। আদেশ ও তাঁর অনুগামীরাও ওই অনুষ্ঠান বয়কট করেন।

পুরপ্রধান সন্দীপের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘অরুণবাবু ব্যক্তিগত উদ্যোগে পথবাতি উদ্বোধনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন। আমি কোনও ওয়ার্ডে গিয়ে পথবাতি উদ্বোধন করতে পছন্দ করি না।’’

উপ-পুরপ্রধান অরিন্দমের দাবি, ‘‘ওঁরা দুজনেই দলে সক্রিয় নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে কোনও ভুল বোঝাবুঝি হয়ে থাকলে, তা মিটিয়ে দেওয়া হবে। আমি দলীয় কাজে ব্যস্ত থাকায় পথবাতির উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে যেতে পারিনি।’’

২০১৭ সালের পুরসভা নির্বাচনে সিপিএমের সমর্থনে কংগ্রেসের টিকিটে ওই ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন অরুণ। নির্বাচনের আগে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন ওই ওয়ার্ডের তৎকালীন কাউন্সিলর আদেশ। নির্বাচনে আদেশকে প্রার্থী করে তৃণমূল। কিন্তু আদেশকে পরাজিত করে ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন অরুণ। এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ, তখন থেকেই অরুণ ও আদেশ এবং তাঁদের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ‘বিরোধ’ লেগেই রয়েছে।

অরুণের অভিযোগ, ‘‘আদেশ দীর্ঘদিন ধরে ওয়ার্ডে দলবিরোধী কাজকর্ম করছেন। ক্ষমতাচ্যুত হয়ে তিনি আমাকে উন্নয়নের কাজ করতে দিচ্ছেন না। তারই প্রতিবাদে এ দিন পুরসভার ওয়ার্ড কমিটির তরফে তাঁকে ও তাঁর অনুগামীদের পথবাতি উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।’’ অরুণের দাবি, পুরসভার তরফে প্রায় ৭ লক্ষ টাকা খরচে রবীন্দ্রপল্লি ও অশোকপল্লিতে ১৭টি এলইডি পথবাতি বসানোর কাজ চালু হয়েছে।

আদেশের পাল্টা দাবি, ‘‘আমি সব সময় আমার অনুগামীদের নিয়ে দল ও মানুষের স্বার্থে কাজ করে চলেছি। অরুণ কাউন্সিলার নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত নানা সরকারি উন্নয়নমূলক প্রকল্পে দুর্নীতি ও অনিয়ম করে চলেছেন।’’ আর অরুণ বলছেন, ‘‘আদেশই দশ বছর কাউন্সিলার থাকাকালীন সরকারি উন্নয়নমূলক প্রকল্পে দুর্নীতি ও অনিয়ম করেছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement