তৃণমূলের রবির হাতেই রাসমেলার রাশ

বৃহস্পতিবার মঞ্চে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের পাশে বসেছিলেন আলিপুরদুয়ারের সাংসদ দশরথ তিরকি। একটু দূরে বিধায়ক মিহির গোস্বামীর পাশে বসেছিলেন কোচবিহারের সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়।

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৮ ০৫:১৫
Share:

পাশাপাশি: মেলা উদ্বোধনে মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। রয়েছেন সাংসদ পার্থপ্রতিম রায় (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র

ডাক পেয়েছিলেন সব পক্ষই। হাজিরও ছিলেন। তবে রাসমেলার মঞ্চেও যুব ও তৃণমূলের দ্বন্দ্বের ছায়া দেখা গিয়েছে বলে অভিযোগ উঠল কোচবিহারে। ফিতে কাটা থেকে প্রদীপ প্রজ্বলন— সব কিছুতেই নেতা-মন্ত্রীদের ‘ঠেলাঠেলি’ করতে দেখা গিয়েছে বলে দাবি। তবে মোটের উপর অনুষ্ঠানের রাশ ছিল জেলা তৃণমূল সভাপতি, মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের হাতেই।

Advertisement

বৃহস্পতিবার মঞ্চে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের পাশে বসেছিলেন আলিপুরদুয়ারের সাংসদ দশরথ তিরকি। একটু দূরে বিধায়ক মিহির গোস্বামীর পাশে বসেছিলেন কোচবিহারের সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়। মাঝামাঝি বসেছিলেন বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ, কোচবিহার জেলা পরিষদের সভাধিপতি উমাকান্ত বর্মণ থেকে কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান ভূষণ সিংহ। জেলাশাসক কৌশিক সাহা ও পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে অবশ্য মন্ত্রী ও আলিপুরদুয়ারের সাংসদের পাশের চেয়ারে বসেছিলেন। রাসমেলার মঞ্চই শুধু নয়, মুখ্যমন্ত্রীর নামে মদনমোহন মন্দিরে পুজো দেওয়া থেকে শুরু করে রাসচক্র ঘোরানো— সবেতেই যেন ছিল প্রতিযোগিতা। সব জায়গায় অবশ্য মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথবাবুকেই নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা গিয়েছে বলে দাবি।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাসমেলার মাথে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়। সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ মদনমোহন মন্দিরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে পুজো দেওয়া হয়। মঞ্চে মেলার আয়োজক, পুরসভার চেয়ারম্যান ভূষণ সিংহ বক্তব্য রাখার পরেই রবীন্দ্রনাথবাবু বক্তব্য রাখেন। তার আগেই অবশ্য মেলার উদ্বোধন করে দেওয়া হয়। সেখানে বক্তৃতার পরেই মন্ত্রী, জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার মুখ্যমন্ত্রীর নামে পুজো দিতে মন্দিরে পৌঁছে যান। অন্য নেতারা তখনও রাসমেলার মঞ্চেই বসেছিলেন। পরে বিশেষ পুজোর মধ্যে দিয়ে রাসচক্র ঘুরিয়ে উৎসবের সূচনা করেন জেলাশাসক। সেখানেও মন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন পার্থবাবুও। তবে সেখানেও দু’জনের দূরত্ব স্পষ্ট ছিল উপস্থিত অনেকের দাবি।

Advertisement

পার্থবাবুর অনুগামীদের অনেকেরই অভিযোগ, জেলার সাংসদকে কোণঠাসা করতেই পাশের জেলার সাংসদকে মঞ্চে আমন্ত্রণ করা হয়েছে। মঞ্চে নানাভাবে তাঁকে পিছনে রাখার চেষ্টা হয়েছে। শুধু তাই নয়, মুখ্যমন্ত্রীর নামে পুজো দেওয়ার সময়ও অন্যরা যাতে সামিল হতে না পারেন সে জন্য সেভাবেই পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। জেলা সভাপতির অনুগামীদের অবশ্য পাল্টা দাবি, সাংসদ ও তাঁর অনুগামীরা বরাবর মন্ত্রীকে অসম্মানের চেষ্টা করেন। সব জায়গায় মন্ত্রীকে টপকে তিনি নিজে সামনে যাওয়ার চেষ্টা করেন। মেলাতেও তা করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল নেতা বলেন, “যা ঘটছে তা সবার সামনেই হচ্ছে। সবাই হাসাহাসি করছে। এ ভাবেই আমাদের চলতে হবে।”

যদিও রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “কোনও দ্বন্দ্ব কোথাও নেই। এ সবই তৈরি করা। হাজার হাজার মানুষের সামনে মেলার উদ্বোধন হয়েছে। এখানে দ্বন্দ্বের কী আছে!” পার্থবাবুও বলেন, “রাসমেলায় রাজনীতি ঠিক নয়। আমি সাধারণ মানুষের মতোই মেলা উপভোগ করেছি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement