রায়গঞ্জের কুলিক পক্ষিনিবাসে প্রবেশ-মূল্য বাতিল করল বন দফতর। বৃহস্পতিবার। —নিজস্ব চিত্র।
প্রবেশমূল্য উঠতেই বনাঞ্চলের নিরাপত্তায় ঢিলেঢালা মনোভাব দেখা যাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলল আলিপুরদুয়ারের পর্যটন ব্যবসায়ীদের একাধিক সংগঠন। জঙ্গলে ঢোকার প্রবেশমূল্য নেওয়া নিয়ে গত সপ্তাহে আলিপুরদুয়ারের সভা থেকে বন দফতরকে কার্যত ভর্ৎসনা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বক্সার জঙ্গলে ঢোকার প্রবেশমূল্যের বিষয়টি শুনে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, “পর্যটকদের জন্য কোনও প্রবেশমূল্য হবে না।” সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর সেই মন্তব্যের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই রাজ্যের অভায়রণ্য, জাতীয় উদ্যান-সহ বন দফতরের যে সব জায়গায় পর্যটকেরা যান, সেখানে প্রবেশমূল্য না নেওয়ার নির্দেশ দেয় বন দফতর। একই নির্দেশিকা জারি হয় বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পেও।
কিন্তু পর্যটন ব্যবসায়ীদের একাংশের অভিযোগ, শুরু থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর ওই নির্দেশের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়। যার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বন সংরক্ষণেও। ‘ডুয়ার্স টুরিজ়ম ডেভেলপমেন্ট ওয়েলফেয়ার সোসাইটি’র সভাপতি পার্থসারথি রায় বলেন, “বক্সার প্রবেশের মুখে রাজাভাতখাওয়া গেটটি পূর্ত দফতরের রাস্তার মধ্যে পড়ে। ফলে সেখানে পর্যটকদের কাছ থেকে অর্থ নেওয়া বন্ধের দাবিতে দীর্ঘদিন থেকেই আমরা আন্দোলন করছিলাম। মুখ্যমন্ত্রী এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ায় আমরা খুশি। কিন্তু মাথায় রাখতে হবে, মুখ্যমন্ত্রী শুধুমাত্র প্রবেশমূল্য তুলে দেওয়ার কথা বলেছেন। বন সংরক্ষণে বিধিনিষেধ তুলে দেওয়ার কথা বলেননি। অথচ, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে প্রথম দু’দিন অনেকের মনে তেমন আশঙ্কাই দানা বেধেছিল। আমরা চাই প্রবেশমূল্য বাদ দিয়ে বক্সায় বন সংরক্ষণে সমস্ত বিধিনিষেধ লাগু থাকুক।”
আলিপুরদুয়ার ‘ডিস্ট্রিক্ট হোটেল অ্যান্ড রিসর্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক পবনকুমার পুরোহিত বলেন, “আলিপুরদুয়ার জেলায় পর্যটকরা আসেন বন দেখতে। বন না থাকলে এই জেলায় পর্যটকরা আসবেন না। তাই বনে ঢোকার ক্ষেত্রে প্রবেশমূল্য তুলে নেওয়ায় আমরা খুশি। কিন্তু আমরা চাই বনের সংরক্ষণ যাতে আগের মতো করে হয়।” পরিবেশপ্রেমীদের একাংশের আবার আশঙ্কা, প্রবেশমূল্য উঠে যাওযার ফলে জঙ্গলে পর্যটকদের ভিড় আরও বাড়বে। তার ফলে পরিবেশ নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি জঙ্গলের পশু-পাখিদের সঙ্কটও বাড়বে। যার ফলে বন সংরক্ষণের কাজে আরও বেশি যত্নশীল হতে হবে বন দফতরকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বন দফতরের এক কর্তা বলেছেন, “পর্যটকদের ঢোকার ক্ষেত্রে প্রবেশমূল্য উঠে গেলেও জেলায় বন সংরক্ষণের কাজ আগের মতোই চলছে। শুধু তাই নয়, প্রবেশমূল্য উঠে যাওয়ার পর জেলার বনাঞ্চলে নজরদারিও আগের তুলনায় অনেকটা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।”
দিল্লিতে মিলবে মাঝেরডাবরির চা
আলিপুরদুয়ার: দিল্লির অভিজাত এলাকায় যাবে মাঝেরডাবরি বাগানের চা পাতা। কেজি প্রতি যার দাম হতে পারে কয়েক লক্ষ টাকা পর্যন্ত। আলিপুরদুয়ারের মাঝেরডাবরি চা বাগান ৩৮ ধরনের চা পাতা উৎপাদন করে আসছে। যার মধ্যে গোল্ডেন টি, হোয়াইট টি-সহ বিভিন্ন চা পাতা রয়েছে। অনেকটা দামি হলেও নানান অভিজাত এলাকায় এই চা পাতাগুলির যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। আর সেই কথা মাথায় রেখেই এ বার দিল্লির অভিজাত এলাকাতেও সেই চা পাতার সম্ভার নিয়ে হাজির হতে চলেছেন মাঝেরডাবরি চা বাগান কর্তৃপক্ষ। চা বাগানের ম্যানেজার চিন্ময় ধর বলেন, “মাঝেরডাবরি চা বাগানে উৎপাদিত চা পাতার চাহিদা দেশের নানা প্রান্তের সঙ্গে দিল্লির অভিজাত এলাকাতেও রয়েছে। সেই কথা মাথায় রেখেই সেখানে একটি আউটলেট করার পরিকল্পনা আমরা নিয়েছি।” বাগান কর্তৃপক্ষ জানান, আলিপুরদুয়ারে তাদের ‘ডাবরি টি লাউঞ্জে’ এখন থেকে অভিনব স্বাদের চা পাবেন ক্রেতারা। নিজস্ব সংবাদদাতা