100 days work

জব-কার্ডে ৮১ হাজার নাম  ভুয়ো কি না, প্রশ্ন

করোনা আবহে গত দুই আর্থিক বছরে জলপাইগুড়ি জেলায় একশো দিনের কাজে জোয়ার এসেছিল। লাখ লাখ শ্রমিককে কাজ দেওয়া হয়েছে বলে সরকারি তথ্যে উল্লেখ হয়েছিল।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২২ ০৭:৫২
Share:

জব কার্ডের নাম নিয়ে জল্পনা। প্রতীকী ছবি।

একশো দিন কাজের প্রকল্পের ‘সক্রিয় শ্রমিক’ তালিকায় থাকা ৮১ হাজারেরও বেশি নাম কি ভুয়ো, প্রশাসনিক স্তরে এমনই সন্দেহ দেখা দিয়েছে জলপাইগুড়িতে। প্রশাসনের আধিকারিকদের একাংশের দাবি, এই নামগুলি ভুয়ো। কারণ, যে আধার কার্ডের নম্বর দিয়ে এই ব্যক্তিদের নাম জব-কার্ডে উঠেছিল, সে আধার কার্ডের নম্বরগুলি ভুয়ো অথবা ওই একই আধার নম্বর ব্যবহার করে অন্য কারও নাম আগে থেকেই জব-কার্ডে তোলা ছিল। এই ভুয়ো নামগুলি একশো দিনের জবকার্ড থেকে বাদ যাওয়া সময়ের অপেক্ষা বলে দাবি। ইতিমধ্যেই এই তথ্য নবান্ন হয়ে দিল্লিতেও পৌঁছেছে বলে খবর। একশো দিনের কাজের সরকারি পোর্টালে জলপাইগুড়ি জেলায় ৮১ হাজারেরও বেশি শ্রমিকের নামের সঙ্গে থাকা আধার কার্ডের তথ্য প্রত্যাখ্যাত হয়েছে বলে উল্লেখ্য রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর।

Advertisement

করোনা আবহে গত দুই আর্থিক বছরে জলপাইগুড়ি জেলায় একশো দিনের কাজে জোয়ার এসেছিল। লাখ লাখ শ্রমিককে কাজ দেওয়া হয়েছে বলে সরকারি তথ্যে উল্লেখ হয়েছিল। রাজ্যের মধ্যে অন্যতম অগ্রণী ছিল জলপাইগুড়ি জেলা। কাজে শ্রমিক সংখ্যা বিপুল বেড়ে যাওয়ায় একাধিক বার কেন্দ্রীয় দল জেলায় এসেছিল কাজ দেখতে। সম্প্রতি এই ভুয়ো-শ্রমিকের প্রসঙ্গটি সামনে আসার পরে, প্রশ্ন উঠেছে ৮১ হাজার ভুয়ো শ্রমিকের নামে কত দিনের মজুরি বরাদ্দ হয়েছে এবং বরাদ্দ হয়ে থাকলে সে মজুরি কার পকেটে গিয়েছে?

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, জলপাইগুড়ি জেলায় জব-কার্ডে নাম থাকা মোট শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ১০ লক্ষ। যাঁদেরর মধ্যে ‘সক্রিয় শ্রমিক’ তথা যাঁরা গত দুই আর্থিক বছরে কাজ করেছেন এমন শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ছয় লক্ষ। এই ছয় লক্ষ শ্রমিকের মধ্যে ৮১ হাজার শ্রমিকের আধার কার্ডের তথ্য যথাযথ নয় বলে দেখা গিয়েছে। এঁদের পুরোটাই ভুয়ো শ্রমিক বলে অভিযোগ বিরোধীদের।

Advertisement

জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদ জয়ন্তকুমার রায়ের দাবি, “একশো দিনের কাজ নিয়ে কেন্দ্রের কাছে আমরা লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলাম। যা-যা লেখা হয়েছিল তার সবটাই প্রমাণ হচ্ছে। কয়েক লক্ষ ভুয়ো শ্রমিক ঢুকে রয়েছে তালিকায়।” জেলা তৃণমূল সভাপতি মহুয়া গোপের পাল্টা বক্তব্য, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে জেলা প্রশাসনই তো ভুয়ো-কার্ড বাছার কাজ করছে। স্বচ্ছতা রেখে, গ্রামের মানুষকে কাজ দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য। বিজেপিই রাজনীতি করে একশো দিনের প্রকল্পের টাকা বন্ধ করে রেখেছে।”

জলপাইগুড়ির জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলেন, “জব-কার্ডের তথ্য যাচাই চলছে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার কাজও চলছে। সে কাজ শেষ হলে, একশো দিনের কাজের তথ্য যাচাই শেষ করতে হবে। এখনও কোনও নাম কাটা হয়নি। তবে নাম কাটার নির্দিষ্ট পদ্ধতি রয়েছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement