দাঁড়য়ে: শিলিগুড়িতে বাস টার্মিনাসে। নিজস্ব চিত্র
আয় বাড়াতে মাস ছয়েক আগে পর্যটন উন্নয়ন নিগমের কাছ থেকে চুক্তিতে পাঁচটি বাতানুকূল ভলভো বাস নিয়েছিল উত্তরবঙ্গে রাষ্ট্রীয় পরিবহন নিগম (এনবিএসটিসি)। যদিও এরমধ্যেই চারটি বাস ফ্রাঞ্চাইজির হাতে তুলে দিয়েছেন নিগমের কর্তারা। ওই চারটি বাসের দু’টি শিলিগুড়ি-কলকাতা এবং অন্য দু’টি কোচবিহার-কলকাতা রুটে ‘বাংলাশ্রী’ বাস হিসেবে চলছে।
এনবিএসটিসি-র এমডি সুবল রায় জানান, তাঁরা বাস চালিয়ে আয় করতে পারছিলেন না বলেই ফ্রাঞ্চাইজিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। যদিও তারপরেও মুনাফা হচ্ছে এমন কথা মানছেন না সুবলবাবু। তিনি বলেন, ‘‘কিছুদিন হল আমরা ফ্রাঞ্চাইজি দিয়ে বাস চালাচ্ছি। সেভাবে এখনও লাভ, লোকসান হিসেব করা হয়নি।’’
যে দুই রুটে ফ্রাঞ্চাইজি দিয়েছে নিগম, সেই রুটগুলোতে বেসরকারি সংস্থার ভলভো বাসের টিকিট নিয়ে কাড়াকাড়ি চলে বলে দাবি যাত্রীদের একাংশের। পর্যটন মরসুম শুরু হওয়ায় আরও বেড়েছে টিকিটের চাহিদা। যাত্রীদের অভিযোগ অন্য সময়ের তুলনায় অনেকটাই বেশি দামে টিকিট কাটতে হচ্ছে তাদের। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে বেসরকারি সংস্থা আয় করতে পারলেও কেন পারছে না এনবিএসটিসি কর্তৃপক্ষ। আইএনটিইউসি-র দার্জিলিং জেলা সভাপতি অলোক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘নিগম পাঁচটা বাস নিজেরা চালাতে পারছেন না। সরকারের বাস চালিয়ে মুনাফা করছে ফ্রাঞ্চাইজি। এটা লজ্জার। অত্যাধুনিক ভলভো বাসগুলো ফ্রাঞ্চাইজি দেওয়ার পিছনে কোনও রহস্য আছে কিনা তার তদন্ত হওয়া জরুরি।’’
নিগম সূত্রে জানা গিয়েছে ভলভো বাসগুলো ৫৯ সিটের। ফ্রাঞ্চাইজি পাওয়া একটি সংস্থার কর্মী বিপুল সাহা বলেন, ‘‘প্রতিদিনই যাত্রী ভর্তি বাস যাচ্ছে। কোনও সিট খালি যাচ্ছে না। টিকিটেরও ভাল চাহিদা রয়েছে।’’ ফ্রাঞ্চাইজি দেওয়ার পর থেকে বাসে নিয়মিত যাত্রী হওয়ার কথা স্বীকার করেছেন এনবিএসটিসি-র শিলিগুড়ির ডিভিশনাল ম্যানেজার দীপঙ্কর দত্ত। শিলিগুড়ি-কলকাতা ও কোচবিহার-কলকাতা রুটে বাতানুকূল ভলভো বাস চালায় এমন একটি বেসরকারি সংস্থার কর্তা সুরজিৎ দাম বলেন, ‘‘টিকিটের এমন চাহিদা চলছে যে অনলাইনে আমাদের পাঁচটি বাসের আগামি দশ দিনের বেশিরভাগ টিকিটই বুক হয়ে গিয়েছে। খুব ভাল ব্যবসা হচ্ছে।’’
কী চুক্তিতে বাসগুলো ফ্রাঞ্চাইজি দেওয়া হয়েছে তা বলতে চাইছেন না নিগমের কর্তারা। সূত্রের খবর, বাসের চালক, রুট, তেল খরচ, রক্ষণাবেক্ষণ সবটাই এনবিএসটিসি-র দায়িত্বে থাকছে। শুধু বাসের টিকিট বিক্রি করবে ফ্রাঞ্চাইজি। টিকিটের দাম নিগমের হিসেবে নিতে হবে বলেই জানিয়েছেন এমডি। নিগমের চেয়ারম্যান মিহির গোস্বামী বলেন, ‘‘অন্য পরিবহণ নিগমের অনুকরণেই আমরা বাসগুলো ফ্রাঞ্চাইজি দিয়েছি। সমস্ত কাজ স্বচ্ছ পদ্ধতিতেই হয়েছে। আমরা কিছুদিন দেখে পর্যালোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।’’