বুধবার বেলা ১২টা থেকে মাধ্যমিকের ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষা শুরু হয়। কিন্তু তার মিনিট পাঁচেক আগে ১১টা ৫৫ মিনিট নাগাদ এ দিনের পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের বিভিন্ন পাতার ছবি উত্তর দিনাজপুরের বাসিন্দা ও অভিভাবকদের হোয়াট্সঅ্যাপে চালাচালি শুরু হয়ে যায়।
হোয়াট্সঅ্যাপের মাধ্যমেই সেই প্রশ্নপত্রের ছবি গিয়ে পৌঁছয় জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাদের কাছেও। তত ক্ষণে অবশ্য পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষাকেন্দ্রের ভিতরে ঢুকে গিয়েছে। এ দিন প্রথমে ভৌতবিজ্ঞান প্রশ্নের প্রথম, অষ্টম ও নবম পাতার ছবি ফাঁস হয়ে যায়। তার কিছু ক্ষণ পর ওই প্রশ্নপত্রের দ্বিতীয় ও তৃতীয় পাতার ছবিও হোয়াট্সঅ্যাপের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রশ্নপত্রটির ছবিটি আসল। এ দিকে, প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনাকে কেন্দ্র করে শহরের বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্রের সামনে অপেক্ষারত অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। কী ভাবে ও কাদের গাফিলতিতে এমন হল, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তাঁরা।
রায়গঞ্জের করোনেশন হাইস্কুলের পরীক্ষার্থীদের আসন পড়েছে শহরের দেবীনগর মহারাজা জগদীশনাথ হাইস্কুলে। ওই পরীক্ষাকেন্দ্রের এক পরীক্ষার্থীর বাবা রায়গঞ্জের কলেজপাড়া এলাকার বাসিন্দা, পেশায় গানের শিক্ষক সরোজ সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘পড়ুয়ারা সারা বছর কঠোর পরিশ্রম করে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে। সেখানে পরীক্ষার আগে ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রে কেউ পরীক্ষা দিলে মেধার দাম আর থাকল কোথায়! আর ১১টা ৫৫ মিনিটের আগে যে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়নি, তার গ্যারান্টি কে দেবেন?’’ অনেক পরীক্ষার্থীও একই প্রশ্ন তোলেন।
রায়গঞ্জের রবীন্দ্রপ়ল্লি এলাকার বাসিন্দা আরেক অভিভাবক পেশায় ঠিকাদার কুশল গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সরকারি পরীক্ষা ব্যবস্থার ফাঁক গলে এমন ঘটনা অত্যন্ত লজ্জাজনক। কার বা কাদের গাফিলতিতে এই ঘটনা ঘটল ও হোয়াট্সঅ্যাপে প্রশ্নপত্র চলে এলে তা দিয়ে পরীক্ষা দিয়ে কেউ সুবিধা পেল কী না, তা প্রশাসনের তদন্ত করা উচিত। তদন্তে অস্বচ্ছতা ধরা পড়লে এ দিনের পরীক্ষা বাতিল হওয়া উচিত।’’
শহরের একাধিক স্কুলের পরীক্ষার্থীদের অবশ্য দাবি, পরীক্ষা দিয়ে বার হওয়ার পরে এই ঘটনার কথা শুনেছেন। জেলাশাসক আয়েশা রানির দাবি, কোথা থেকে প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে, তা প্রশাসন জানতে পারেনি। পর্ষদের তরফেও প্রশাসনের কাছে কিছু জানতে চাওয়া হয়নি।
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) নারায়ণ সরকারের দাবি, উত্তর দিনাজপুর জেলা থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়নি।