নজর: নৌকাঘাট মোড় এলাকায় গাড়িতে তল্লাশি পুলিশের। সোমবার। —নিজস্ব চিত্র
এনজেপি স্টেশন
২১টি সিসিটিভি ক্যামেরার মধ্যে খারাপ ১৭টিই। রেল সুরক্ষা বাহিনীর স্ক্যানার খারাপ হওয়ার পরে সেটা উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুরো স্টেশন চত্ত্বরে একমাত্র ভিআইপি ফুটব্রিজে রেলপুলিশের স্ক্যানার চলছে। কিন্তু ট্রেন যাত্রীদের ভিড় থাকলে সব যাত্রীর ব্যাগ তল্লাশি একটি স্ক্যানার দিয়ে করা প্রায় অসম্ভব। অসংরক্ষিত টিকিট কাউন্টারের পাশেই ফুটব্রিজ এড়িয়ে লাইনে পেরিয়ে চলছে যাতায়াত। কিন্তু সেখানেই দেখা গেল পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ারদের বসে মোবাইলে ব্যস্ত থাকতে। কিছুদিন আগেই রেল কর্তারা দাবি করেছিলেন টিকিট অথবা প্ল্যাটফর্ম টিকিট ছাড়া যাত্রীদের স্টেশনে ঢুকতেই দেওয়া হবে না। কিন্তু সেরকম কোনও নজরদারি সোমবার চোখে পড়েনি। রেলের দাবি, স্ক্যানারগুলি নতুন করে বসানো হবে। প্ল্যাটফর্মের ভিতরেও নজরদারি ঢিলেঢালা বলে অভিযোগ।
তেনজিং নোরগে বাসস্যান্ড
প্রধাননগর থানা এলাকার গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। কিছুদিন আগে পর্যন্ত তেনজিং নোরগে বাস্ট্যান্ড থেকে নিয়মিতভাবে গাঁজা উদ্ধার করছিল পুলিশ। কিন্তু ভোটের পরে হঠাৎ তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। টার্মিনাসে রয়েছে পরিবহণ দফতরের ১২টি ক্যামেরা। পুলিশের আরও তিনটি। কিন্তু সেগুলি মাঝেমধ্যেই খারাপ হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। পরিবহণ দফতরের কর্তাদের দাবি, ১৫ অগস্ট, ২৬ জানুয়ারির আগে নিরাপত্তা কড়া হয়। কিন্তু স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, সাধারণ সময়ে মাঝে মধ্যে তল্লাশিতে আসে পুলিশ। গত কয়েকদিন ধরে কোনও তল্লাশিতে পুলিশ দেখা যায়নি বলে দাবি স্থানীয় কর্মী, ব্যবসায়ীদের। উত্তর ও উত্তরপূর্বের ৫০০ বাস রোজ ছাড়ে এখান থেকেই।
শিলিগুড়ি জংশন
স্টেশন চত্ত্বরের মধ্যে কোনও সিসিটিভি ক্যামেরা নেই। এখানেও ব্যাগের স্ক্যানার খারাপ। সেটা তুলে নেওয়া হয়েছে নতুন একটা দেওয়া হবে বলে। টিকিট কাউন্টারের সামনে একটি সিসিটিভি ক্যামেরা যাতায়াতের পথের উল্টো দিকে তাক করা। স্টেশন চত্ত্বরে ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মের ফুটব্রিজের শুরুতে এবং ফুটব্রিজের বাইরের দিকে ৩ আর ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মের দিকে আরও একটি ক্যামেরা রয়েছে। পুরো স্টেশন চত্ত্বরে ক্যামেরা বাড়ানো দরকার বলে মনে করছেন রেলের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সংস্থাগুলিরই কয়েকজন। সোমবার বিকেলে শিলিগুড়ি-আলিপুরদুয়ার প্যাসেঞ্জার ট্রেন ছাড়ার সময়েও নজরদারির বদলে একপাশে দাঁড়িয়ে রেলপুলিশ এবং সিভিক ভলান্টিয়রদের আড্ডা নজরে পড়েছে।
নৌকাঘাট মোড়
শহর থেকে বেরিয়ে এশিয়ান হাইওয়ে ও বাগডোগরা হয়ে বিহার এবং নেপালের দিকে যেতে গুরুত্বপূর্ণ মোড় এটি। এখানে দুপুরের পরে নিয়মিতভাবে নাকা-তল্লাশি হয় বলে দাবি পুলিশের। রয়েছে একটি ট্রাফিক গার্ডের নাকা পয়েন্ট। সেখানে নিয়মিতভাবে তল্লাশি চলে। তবে ডাকাতি এবং গ্রেনেড উদ্ধারের পরে এই মোড়টিতে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সবসময় নাকা-চেকিং করা হচ্ছে। মেডিক্যাল মোড়ের দিকে যেতে এই মোড়ে কোনও সিসিটিভি ক্যামেরা নজরে আসেনি। রবিবার এবং সোমবার তল্লাশি দেখা গিয়েছে।
তিনবাতি মোড়
বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, হঠাৎ হঠাৎ কখনও চেকিং হয় এই এলাকায়। কিন্তু গ্রেনেড উদ্ধারের পরে পরপর দু’দিন গুরুত্বপূর্ণ এই মোড়ে নাকা তল্লাশি চলেনি বলেই স্থানীয়দের অনেকের দাবি। সিসিটিভি ক্যামেরা নেই এখানেও। অসম, কোচবিহার, জলপাইগুড়ির মতো এলাকা থেকে বাসে এসে এনজেপি স্টেশনে যাওয়ার মাঝে মোড়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। স্টেশন চত্ত্বরের নিরাপত্তা এমনিতেই ঢিলেঢালা। তিনবাতিতে নজরদারি আলগা হওয়ার মানে উত্তর-পূর্বের যে কোনও রাজ্য থেকে নিরাপদেই স্টেশন পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়া সম্ভব। যদিও পুলিশের দাবি, শহরে ডাকাতির পর তিনবাতি মোড়েও আগের থেকে তল্লাশি বাড়ানো হয়েছে। যদিও তা মানছেন না স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
দার্জিলিং মোড়
এই জায়গায় সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে ১১টি। সবগুলি সচল বলে জানা গিয়েছে। ট্রাফিক পুলিশের নাকা রয়েছে মোড়ের দুই জায়গায়। কিন্তু গত কয়েকদিনে সেখানে নিরাপত্তা সংক্রান্ত কোনও নাকা-তল্লাশি থানা থেকে চলেনি বলেই স্থানীয়দের দাবি। পরপর ডাকাতির পরে দার্জিলিং মোড় আন্ডারপাসের তলায় চেকপোস্টের দিক থেকে আসা গাড়ি-ঘোড়ার উপর নজরদারি চালাতে মাত্র দু’দিন নাকা তল্লাশি চালানো হয়েছে বলে জানাচ্ছে পুলিশের একাংশই। পাহাড় থেকে শিলিগুড়ি ছুঁয়ে অবাধে বিহার বা নেপালের দিকে চলে যাওয়ার ক্ষেত্রে এখানেও নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করছে পুলিশ।
চেকপোস্ট মোড়
সিকিম, কালিম্পং থেকে হোক বা ডুর্য়াস, সেবক হয়ে হোক। শহরে ঢোকার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মোড়। সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে ৯টি। তার মধ্যে দু’টি মাঝেমধ্যেই খারাপ হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। ডাকাতির পরে কয়েকবার থানা থেকে নাকা তল্লাশি চালানো হয়েছে। গ্রেনেড উদ্ধারের পরেও একবার নাকা বসানো হয়েছিল বলে সূত্রের দাবি।