আমরা ওরাকে দুরে সরিয়ে নজর কেড়েছে মালদহের ইংরেজবাজারের ঐক্য সংঘ। টানা দশ বছর ধরে ইংরেজবাজারের গাজল ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে দুর্গা পুজো করে আসছেন ববি আহমেদ, অজিত ঘোষ, ধীরাজ হরিজনেরা। বাজেট কিংবা থিমের চমক না থাকলেও সম্প্রীতির পুজো হিসেবে একাধিক বার জেলার সেরা পুজোর শিরোপা পেয়েছে ঐক্য সংঘ।
এবারও চমক রয়েছে তাদের পুজোতে। পুজো কমিটির সম্পাদক ববি আহমেদ বলেন, ‘‘গাজল ট্যাক্সি স্ট্যান্ড এলাকায় আমরা বিভিন্ন ধর্মের মানুষ একসঙ্গে মিলে মিশে ব্যবসা করি। দেশ বিদেশে যে সাম্প্রদায়িক হানাহানি চলছে তার থেকে দূরে থাকতে চাই আমরা। তাই আমরা সবাই মিলে দুর্গা পুজো করার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। আমাদের পুজো দেখতে দর্শনার্থীরা ভিড় জমান। তাই প্রতিবারই কিছু নতুনত্ব আনার চেষ্টা করি। এ বারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।’’
গাজল ট্যাক্সি স্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় লন্ড্রি চালান ববি আহমেদ। মিষ্টির দোকান রয়েছে অজিত ঘোষের। ওষুধের দোকানের মালিক মহম্মদ ফিরোজ করিম চৌধুরী। ২০০৭ সালে প্রথমবার দুর্গা পুজো করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন তাঁরা। তাঁদের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছিলেন অন্যান্য ব্যবসায়ীরা। কে কোন ধর্মের তা ভেবে দেখেননি কেউ। এমনকী, তা বাধা হয়েও দাঁড়ায়নি। সকলে মিলে গড়ে তোলেন ঐক্য সংঘ। আর এই ঐক্যের সংঘের পুজো এবারে দশে পা দিল। দশ বছর পূর্তি উপলক্ষে কম বাজেট নিয়েও অন্যান্য পুজোকে টেক্কা দিতে প্রস্তুত ঐক্য সংঘ।
পুজো উদ্যোক্তারা জানান, এবারে পুজোর বাজেট তিন লক্ষ টাকা। কাল্পনিক মন্দিরের আদলে তৈরি হয়েছে মণ্ডপ। আর মণ্ডপে নজরে আসবে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের নানান সচেতনতামূলক প্রচার। বাল্য বিবাহ রোধ থেকে শুরু করে শিশু শ্রম। এছাড়া সেভ ডাইভ-সেফ লাইফ, ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনতা মূলক প্রচার চালানো হবে পুজো মণ্ডপে। ফেস্টুন ও ব্যানারের মাধ্যমে তা তুলে ধরা হবে। ঐক্য সংঘের পুজোয় দেবীর সাবেকি রূপ। শুধু প্রতিমা কিংবা মণ্ডপে নয়, চমক থাকছে আলোকসজ্জাতেও। পুজো কমিটির সভাপতি অজিত ঘোষ বলেন, ‘‘ষষ্ঠীর দিনই আমাদের পুজোর উদ্বোধন হয়ে যাবে। জাতি, ধর্ম ভুলে পুজোর পাঁচটা দিন খুবই আনন্দে কাটে আমাদের।’’