এই বৈঠকেই সুশান্ত রায় টিএমসিপির নতুন ইউনিটের পদাধিকারীদের নাম ঘোষণা করেছেন বলে বেধেছে বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র
সরকারি বৈঠকে যোগ দিতে রায়গঞ্জ মেডিক্যালে এসেছিলেন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের উত্তরবঙ্গের জনস্বাস্থ্য আধিকারিক (ওএসডি) সুশান্ত রায়। ওই বৈঠকের পরে, মেডিক্যালের ডাক্তারি স্তরের পড়ুয়াদের মধ্যে টিএমসিপির নতুন কমিটির পদাধিকারীদের নাম ঘোষণা করায় ফের বিতর্কে জড়ালেন তিনি। পাশাপাশি, তিনি ডাক্তারির টিএমসিপির সদস্য পড়ুয়াদের সঙ্গে বৈঠক করে টিএমসিপি ও তৃণমূল করার প্রয়োজনীয়তার কথা বোঝান বলেও অভিযোগ উঠেছে।
যদিও সুশান্তর বক্তব্য, “আমি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিক হলেও আমার একটি ব্যক্তিগত সত্তা রয়েছে।” তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিজেপির প্রচার করতে পারলে, তিনি কেন তৃণমূলের হয়ে কথা বলতে পারবেন না?
ঘটনাচক্রে, সম্প্রতি জলপাইগুড়িতে চিকিৎসকদের ডেঙ্গি কর্মশালায় মিনিট দশেকের আলোচনা সেরে মেডিক্যাল কাউন্সিলে সরকারপন্থী চিকিৎসকদের হয়ে ভোট প্রচারের অভিযোগ উঠেছিল সুশান্তর বিরুদ্ধে। সে সময় তিনি দাবি করেছিলেন, যা করেছেন, তা নিয়ম মেনেই করেছেন।
এ বারের ঘটনার সূত্রপাত, মঙ্গলবার দুপুরে। ওই দিন সুশান্ত রায়গঞ্জ মেডিক্যালের চিকিৎসক ও কর্তাদের সঙ্গে ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেন। এর পরে, তিনি রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের নির্বাচনের প্রচার ও ব্যালট পেপার জমা দেওয়ার বিষয়ে তৃণমূলপন্থী চিকিৎসকদের একাংশের সঙ্গে বৈঠক করেন। অভিযোগ, ওই বৈঠকের পরে সুশান্ত মেডিক্যালের একটি ঘরে টিএমসিপির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে তিনি মেডিক্যালের টিএমসিপির একটি নতুন কমিটির পদাধিকারীদের নাম ঘোষণা করেন। সেখানে তিনি তাঁদের টিএমসিপি ও তৃণমূল করার প্রয়োজনীয়তার কথা বোঝান।
এবিভিপির উত্তরবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজ্য সম্পাদক শুভব্রত অধিকারীর বক্তব্য, “সুশান্তবাবু এক জন স্বাস্থ্যকর্তা হিসেবে সরকারি কাজে এসে টিএমসিপি ও তৃণমূলের প্রচার করে সংবিধান ও সার্ভিস রুল অমান্য করেছেন। সংগঠনের তরফে ওঁর পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নামা হবে।”
ছাত্র পরিষদের প্রাক্তন জেলা সভাপতি তথা জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তুষার গুহের দাবি, রাজ্য সরকারকে টিকিয়ে রাখতে তৃণমূলের নির্দেশে সরকারি আমলা ও কর্মীরা প্রকাশ্যেই শাসক দলের হয়ে কাজ করছেন। সুশান্তর ‘ভূমিকায়’ তা-ই প্রমাণিত হয়েছে। একই দাবি করেছেন এসএফআইয়ের প্রাক্তন জেলা সম্পাদক তথা সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য উত্তম পাল। তবে টিএমসিপির জেলা সভাপতি অনুপ করের দাবি, “বিরোধীরা কিছু না জেনে হাওয়ায় মিথ্যা অভিযোগ তুলছে। মেডিক্যালে টিএমসিপির ইউনিট ছাড়া, অন্য কোনও ছাত্র সংগঠনের ইউনিট নেই। সুশান্তবাবু এক জন স্বাস্থ্যকর্তা হিসেবে মেডিক্যালের ডাক্তারি স্তরের পড়ুয়াদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এর সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই।”