প্রতিবাদ সভায় মেয়র অশোক ভট্টাচার্য।—নিজস্ব চিত্র।
পুরসভার পার্কে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের উদ্যোগে টয়ট্রেন চালুর অনুষ্ঠানে মেয়রকে আমন্ত্রণ না জানানোর প্রতিবাদে মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের ডাকে সভা হল ওই সূর্যসেন পার্কেই। সোমবার ওই প্রতিবাদ সভাতেই শেষ নয়, মেয়র হিসেবে তাঁকে আমন্ত্রণ না জানিয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব ‘অসাংবিধানিক’ কাজ ও ‘অসভ্যতা’ করেছেন বলেও অভিযোগ করেন শিলিগুড়ির মেয়র।
বিষয়টি অল ইন্ডিয়া মেয়র কাউন্সিল এবং ইন্সস্টিটিউট অব লোকাল সেল্ফ গভর্নমেন্ট-এর কাছেও জানানো হবে এবং শীঘ্রই শিলিগুড়িতে ও পরে কলকাতায় কনভেনশন করার কথাও সভায় জানানো হয়। সেখানে বিভিন্ন জায়গার মেয়রদেরও ডাকা হবে বলে জানিয়েছেন অশোকবাবু।
গৌতমবাবু বলেন, ‘‘দফতর থেকে আধিকারিক পুরসভাকে তথা পুর কমিশনারকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলেন। মেয়র আসতে চান বা তাদের কোনও বিষয় থাকলে তখনই জানাতে পারতেন। কোনও রকম অসৌজন্যমূলক আচরণ করা হয়নি। বরং ‘অসভ্যতা’, ‘বেয়াদপি’ এ সব শব্দ, ভাষা প্রয়োগ করে মেয়র অসাংবিধানিক কথা বলছেন। মেয়র পদটি সম্মানের বলে আমরা কিছু বলছি না।’’ মেয়র অবশ্য দাবি করেন, তিনি কোনও খারাপ কথা বলেননি।
মেয়রের অভিযোগ, গত চার বছর ধরে তিনি দেখছেন কোনও সরকারি অনুষ্ঠানে সেখানকার জনপ্রতিনিধি শাসক দলের না হলে তাঁকে ডাকা হয় না। মেয়র বলেন, ‘‘আমি ব্যক্তি অশোক ভট্টাচার্যকে আমন্ত্রণ না করার বিষয়ে বলছি না। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর আমাকে ডাকেননি সেটা এমন কিছু নয়। কিন্তু মেয়র এই পদটাকে তাঁরা অসম্মান করলেন। তাতে শিলিগুড়ির মানুষকে অপমানিত, অমর্যাদা করা হল।’’
সভায় মেয়র জানিয়ে দেন, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের অনুষ্ঠানে জেলা পরিষদ বা মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি, পুরসভার মেয়র বিরোধী দলের হলে ডাকা হচ্ছে না। অথচ সংবিধান সংশোধনের পর ত্রিস্তরীয় ব্যবস্থায় কোনও সরকার পুরসভা, পঞ্চায়েতকে সংবিধান অনুযায়ী অশ্রদ্ধা, অমর্যাদা করতে পারে না। তাই অধিকার ও মর্যাদা রক্ষা করতে বিষয়টি নিয়ে দেশব্যাপী আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
মেয়রের আহ্বানে এ দিনের সভায় পুরসভার চেয়ারম্যান দিলীপ সিংহ, ডেপুটি মেয়র রামভজন মাহাতো-সহ মেয়র পারিষদের অনেকেই ছিলেন। ছিলেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকারও। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের তরফে ২ কোটি ৮৮ লক্ষ টাকা খরচ করে সূর্যসেন পার্কে টয়ট্রেন চালু করা হয়। রবিবার উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব ওই প্রকল্প উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে তৃণমূলের অনেক কাউন্সিলরও উপস্থিত ছিলেন।