রাজ্যে বাণিজ্য কর আদায় করতে গিয়ে কর আদায়কারী আধিকারিকদের নানা বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে। শনিবার শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম হলে ডাইরেক্টরেট অব কমার্শিয়াল অ্যান্ড প্রফেশান ট্যাক্সের আইএনটিটিইউসি প্রভাবিত এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের দ্বিতীয় রাজ্য সম্মেলনে এসে এই অভিযোগ জানান সংগঠনের রাজ্য আহ্বায়ক বুদ্ধদেব রাহা। এই অভিযোগকে সমর্থন করলেন রাজ্যের মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। এই সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যার কথা রাজ্য সরকারের কানেও এসেছে বলে তিনি জানান।
এ দিনের সম্মেলনে বাম জমানার অবসানেও কর কাঠামোর পরিবর্তন না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে দফতরের আমলাদের কাজকর্ম নিয়েও পদক্ষেপের দাবি উঠেছে তৃণমূল প্রভাবিত এই সংগঠনের সম্মেলনে। দাবি জানানো হয়েছে, কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ্যভাতারও। এ দিন উপস্থিত ছিলেন দার্জিলিং জেলা তৃণমূলের অন্যতম কার্যকরী সভাপতি অলক চক্রবর্তী সহ রাজ্য কমিটির সদস্যরা। দু’দিনের এই সম্মেলন চলবে রবিবার পর্যন্ত।
এ দিন সম্মেলনে বুদ্ধদেববাবু অভিযোগ করে বলেন, “বিপুল পরিমাণ কর আদায় করা যেত। কিন্তু কর্তৃপক্ষের একাংশের অনিচ্ছাতেই আদায় করা যাচ্ছে না। ফিল্ড অফিসাররা কাজ করতে চাইলেও নানা বাধা রয়েছে।” সংগঠনের দাবি, জাতীয় সড়ক থেকে রাজ্য সড়কে পণ্যবাহী ট্রাক, গাড়ি থেকে কর আদায় করতে হয়। সেই সঙ্গে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ‘ট্রানজিট পয়েন্টে’ও কর আদায় করতে হয়। পর্যাপ্ত কর্মী না থাকায়, কর আদায়ে এক থেকে দু’জন করে আধিকারিকদের পাঠানো হয়। তাই রাতে কর আদায়ে যেতে সাহস পাননা অনেক কর্মী আধিকারিকই। পণ্য আনা নেওয়ার সিন্ডিকেটও কর এড়াতে হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। এক-দু’জন আধিকারিকের পক্ষে সেই হুমকির মুখে দাঁড়িয়ে কর আদায় করা সম্ভব হয় না।
সংগঠনের অভিযোগকে সমর্থন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “বিষয়টি জানি। নানা রকম অবৈধ লেনদেনের জন্য কর আদায়ের বার্ষিক লক্ষ্য মাত্রায় পৌঁছনো যাচ্ছে না। এই প্রবণতা বন্ধ করতে হবে।” দফতরের শীর্ষস্তরেও নজরদারির প্রয়োজন বলে দাবি করেছেন মন্ত্রী। মন্ত্রীর কথায়, “কর আদায়কারীদেরও কাজ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। নানা রকমের সিণ্ডিকেটের হুমকির মুখে কাজ করতে হয়। লোকবল কম থাকায় অনেকেই প্রাণের ভয়ে ঝঁুকিতে যেতে চাইছেন না। এই কর্মীদেরও দায়ী করা যায় না। তবে সরকার বসে নেই। আমরা চেষ্টা করছি কীভাবে কর আদায়ের পরিমাণ বাড়ানো যায়।” তবে কী পদ্ধতি অবলম্বন করতে চাইছে রাজ্য তা অবশ্য তিনি জানাননি।
মহার্ঘ ভাতা ও রাজ্য সরকার ঘোষিত প্রকল্পের রূপায়ন নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন তৃণমূলের দার্জিলিং জেলার শ্রমিক নেতা অলকবাবুও। তিনি বলেন, “মহার্ঘভাতার ক্ষেত্রে কেন্দ্র, রাজ্য সরকারের কর্মীদের মধ্যে বৈষম্য দূর হওয়া ও চিকিত্সা সংক্রান্ত ঘোষিত প্রকল্প গুলি দ্রুত রূপায়ন হওয়া প্রয়োজন।”