সিপিএমের বিক্ষোভের উপরে লাঠি চালানো ঘিরে উত্তেজনার রেশ এখনও কাটেনি। তার পরে আজ, বৃহস্পতিবার সিপিএমের পথ অবরোধ নিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুরে উত্তেজনার পারদ চড়ছে।
সোমবার বালুরঘাটে জেলাশাসকের অফিস চত্বরে বিক্ষোভরত সিপিএম নেতা কর্মীদের উপর পুলিশের লাঠিচার্জের ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায়। তার প্রতিবাদে মঙ্গলবার জেলাজুড়ে মৌনমিছিলের পর একই বিষয়ে সিপিএমের বৃহস্পতিবারের রাস্তা রোকো কর্মসূচির বিরুদ্ধেও কড়া পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। সিপিএমের জেলা সম্পাদক নারায়ণ বিশ্বাস অভিযোগ করেন, উপরে জেলাশাসকের পক্ষপাতমূলক আচরণ এবং নীচে তৃণমূলের সন্ত্রাসের প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে দলীয় মিছিলের উপর পুলিশকে দিয়ে লাঠিচার্জ ও দমনপীড়ন নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন জারি আছে। এ দিন, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে জেলাজুড়ে বিভিন্ন ব্লকের রাস্তার মোড়গুলিতে আধঘণ্টার জন্য প্রতীকী পথ অবরোধ কর্মসূচী নেওয়া হয়েছে বলেও নারায়ণবাবু জানিয়েছেন।
তবে ওই কর্মসূচি জানার পর তার ২৪ ঘণ্টা আগেই বুধবার জেলাশাসক তাপস চৌধুরী বলেন, ‘‘রাস্তা আটকে জনসাধারণের ভোগান্তি বরদাস্ত করা হবে না।’’ এমনকী, আজও প্রয়োজন হলে লাঠি চালানো হতে পারে বলে ইঙ্গিত দেন জেলাশাসক। ফলে সিপিএমের ওই পথ অবরোধ আন্দোলনের ২৪ ঘণ্টা আগে থেকেই সরগরম রাজনৈতিক মহল। সিপিএমের জেলা নেতা অচিন্ত্য চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে পথ অবরোধ আন্দোলনের কর্মসূচী নিয়েছি। গণতান্ত্রিক আন্দেোলনের উপরেও যদি আঘাত আসে, মানুষ তার বিচার করবেন।’’
গঙ্গারামপুর পুরভোটে শাসক দলের বিরুদ্ধে প্রচারে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে এবং অবাধ ভোটের দাবিতে গত শুক্রবার সিপিএমের চার শীর্ষ জেলা নেতা বালুরঘাটে জেলাশাসকের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। এর আগে পঞ্চায়েত ও লোকসভা ভোটে গঙ্গারামপুরের শুকদেবপুর এলাকায় সুষ্ঠু ভোট হয়নি বলে অভিয়োগ তুলে উপস্থিত সিপিএমের জেলা সম্পাদক নারায়ণ বিশ্বাস, প্রাক্তন জেলা সম্পাদক মানবেশ চৌধুরী, জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অমিত সরকার ও এবিটিএর জেলা সম্পাদক কল্যাণ দাস জেলাশাসক তাপস চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করতে যান। বাম নেতাদের অভিযোগ, সেখানে তাঁদের সঙ্গে ‘অশোভন’ আচরণ করেন জেলাশাসক। এরপরই জেলাশাসকের আচরণের বিরুদ্ধে এবং গঙ্গারামপুরে অবাধ ভোটের দাবিতে বালুরঘাটে বিক্ষোভ মিছিল বের করে সিপিএম। ওই মিছিল থেকে জেলাশাসকের বিরুদ্ধে শ্লোগান দিয়ে প্রশাসনিক ভবন চত্বরে ঢোকার চেষ্টা করতেই পুলিশের লাঠিচার্জের মুখে পড়ে যান নেতা কর্মীরা। ওই ঘটনায় জেলা নেতৃত্ব সহ ১১০ জন সিপিএম কর্মী-সমর্থকের বিরুদ্ধে পুলিশ জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করে।