Domestic Violence

‘আবার মেয়ের জন্ম দিবি’? পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বাকে খুন মালদহে! রাতারাতি দেওয়া হল কবর

ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। শনিবার দেহ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্তের জন্য মালদহ মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়েছে। তবে মৃতার স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

হরিশ্চন্দ্রপুর শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৮:০০
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

কন্যাসন্তান জন্ম দেওয়া তাঁর ‘দোষ’। সেই ‘দোষে’ প্রাণ হারাতে হল পাঁচ মাসের এক অন্তঃসত্ত্বাকে। শুধু তাই নয়, প্রমাণ লোপাট করতে প্রতিবেশীদের চোখের আড়ালে রাতারাতি ওই মৃতাকে কবর দিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর থানার মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাংরুয়া গ্রামে। বধূকে শ্বাসরোধ করে মেরে দড়িতে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

বছর তিনেক আগে বিহারের কাটিহার জেলার আজিম নগর থানার চান্দপুর গ্রামের বাসিন্দা নাজির আলমের মেয়ে রেশমা খাতুনের বিয়ে হয় এ রাজ্যের বাংরুয়া গ্রামের বাসিন্দা নুরুল আলির ছেলে সুভান আলির সঙ্গে। নাজির আলম দাবি করেন, মেয়ের বিয়ের সময় সাধ্যমতো যৌতুক দিয়েছিলেন জামাইকে। তবে পাত্রপক্ষ পরে আরও দু’ লাখ টাকা দাবি করে। পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক নাজিরের পক্ষে ওই টাকা জোগাড় করা সম্ভব হয়নি। এ জন্য তার মেয়েকে প্রতি দিন মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতন করা হত বলে অভিযোগ করেন তিনি। জানান, মেয়ের উপর অত্যাচার বেড়ে যায় তার প্রথম কন্যাসন্তান হওয়ার পর। দ্বিতীয় বার মা হতে চলেছেন রেশমা। এতেই নাকি শ্বশুরবাড়ির লোকজন প্রশ্ন করতে শুরু করে যে, আবার মেয়ে হলে কী হবে। এক দিকে, কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ার জন্য নির্যাতন, অন্য দিকে, বাপের বাড়ি থেকে আরও টাকা আনার জন্য চাপ, এই সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে পড়ে ভেঙে পড়েছিলেন বধূ বলে দাবি তাঁর বাপের বাড়ির লোকজনের। এর মধ্যে প্রকাশ্যে আসে অস্বাভাভিক মৃত্যুর ঘটনা।

রেশমার মা জাকেরা খাতুন বলেন, ‘‘শরিয়ত মতে তিন বছর আগে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলাম। যৌতুক হিসেবে বাইক, আসবাবপত্র, গয়না এবং নগদ অর্থ দিয়েছিলাম ছেলেকে (পাত্রকে)। দেড় বছর আগে আমার মেয়ের কন্যাসন্তান হয়েছে। কেন পুত্রসন্তান হল না, তাই নিয়ে ওর স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন মানসিক এবং শারীরিক অত্যাচার শুরু করে। মেয়ে মুখ বুজে সব সহ্য করে নিয়েছিল। এর মাঝে আবার অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়তেই শুরু হয় তীব্র অশান্তি। কন্যাসন্তান জন্ম দিতে পারে ও, এই আশঙ্কায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওর স্বামী, শ্বশুর এবং দেওর ষড়যন্ত্র করে ওকে খুন করে। মেয়ের মৃত্যুর বিচার চাই আমি।’’

Advertisement

অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। শনিবার দেহ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্তের জন্য মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেন, ‘‘ময়নাতদন্তের রিপোর্টে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে। তাতে তদন্ত সহজ হয়ে যাবে। ইতিমধ্যে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে অভিযুক্তরা পলাতক। তাদের খোঁজ চলছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement