জেলাতেই সরকারি পোর্টালে জমা পড়া আবাসের অভিযোগনামাপাঠানো হয়েছে। প্রতীকী চিত্র।
আবাস প্রকল্পে অভিযোগের পাহাড় জমেছে জলপাইগুড়ি জেলায়। অন্তত পনেরো হাজার অভিযোগ এসেছে। নতুন করে আসা এই অভিযোগের গুঁতোয় উদ্বিগ্ন প্রশাসনের আধিকারিকেরা। সূত্রের খবর, কিছু অভিযোগ এসেছে সরাসরি কেন্দ্র থেকে, কিছু অভিযোগ জমা পড়েছে রাজ্য থেকে। শুধু জলপাইগুড়ি নয়, রাজ্যের সব জেলাতেই সরকারি পোর্টালে জমা পড়া আবাসের অভিযোগনামাপাঠানো হয়েছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, আপাতত যে পনেরো হাজার অভিযোগ জমা পড়েছে, সেগুলির অভিযোগকারীদের নাম আবাস তালিকায় রয়েছে কি না তা দেখা এবং অভিযোগ যাচাইয়ের কাজ চলছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের একটি পোর্টাল রয়েছে, যার নাম ‘সিপিগ্রাম’। সরকারি প্রকল্প নিয়ে সাধারণ বাসিন্দাদের অভিযোগ জমা করার কেন্দ্রীয় পোর্টাল এটি। এই পোর্টালে জমা পড়েছে রাশি রাশি অভিযোগ। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও আবাস প্রকল্পে বঞ্চনা করা হয়েছে বলে অভিযোগ জমা পড়েছে। সূত্রের দাবি, কেন্দ্রীয়পোর্টালে জমা পড়া অভিযোগ পাঠানো হয়েছে রাজ্যকে। রাজ্য থেকে সে অভিযোগ পাঠানো হয়েছে জেলায়। আবার রাজ্যের কাছেও নিজস্ব অভিযোগ জমা পড়েছে। অভিযোগ জমা হয়েছে জেলাতেও। সব মিলিয়ে জলপাইগুড়ি নিয়ে নতুন করে জমা পড়া অভিযোগের সংখ্যা পনেরো হাজার।
প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি, এগুলিকে ‘অভিযোগ’ বলা হলেও, এর মধ্যে বহু আবেদন রয়েছে। যাঁরা প্রধানমন্ত্রী আবাস প্রকল্পে ঘর পাচ্ছেন না, তাঁরা অভিযোগের পোর্টালে নাম লিখিয়েছেন। সেগুলিও ‘অভিযোগ’ আকারেই নথিভুক্ত হয়েছে। এ ভাবেই সংখ্যা বেড়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে।
গোড়ায় জলপাইগুড়ি জেলায় আবাস প্রকল্পে প্রায় এক লক্ষ ১৫ হাজার বাসিন্দার নাম ছিল। সে তালিকা নিয়ে ভুরি ভুরি অভিযোগ উঠেছিল। কোথাও ‘প্রভাবশালীর’ আত্মীয়স্বজনদের ঘর বিলির অভিযোগ, তো কোথাও পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও ঘর পাওয়ার তালিকায় নাম ওঠার অভিযোগ ওঠে। প্রশাসনের তরফে ফের শুরু হয় সমীক্ষা। বাদ যায় ত্রিশ হাজারেরও বেশি নাম। তালিকায় থাকা বাকি নামের মধ্যে ৩৬ হাজার প্রাপককে প্রথম পর্যায়ে ঘর দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। সে মতো প্রস্তুতি নিলেও কেন্দ্র থেকে টাকা বরাদ্দ না করায়, কোনও বাড়ি তৈরির কাজ শুরু হয়নি। এই পরিস্থিতিতে নতুন করে ১৫ হাজার অভিযোগের ঢেউ এসে পৌঁছেছে জেলা প্রশাসনের কাছে। যদিও প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি, শুধু জলপাইগুড়ি জেলা নয়, রাজ্যের বহু জেলাতেই এমন ভুরি ভুরি অভিযোগ জমা পড়েছে।
জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলেন, “সরকারি নির্দেশ মেনেই কাজ চলছে।” এ দিকে, মার্চ মাস শেষ হতে চললেও টাকা বরাদ্দ না হওয়ায় তালিকায় নাম থাকা প্রাপকদের ক্ষোভও বেড়ে চলেছে।