উপভোক্তাদের জন্য তৈরি হচ্ছে বাড়ি। প্রতীকী চিত্র।
আবাস যোজনার কেন্দ্রীয় দলের রিপোর্টে নাম এসেছে দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলার। আবাস প্রকল্পে গরমিলের উল্লেখ করে পদক্ষেপ করার নির্দেশ রয়েছে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের। তবে স্থানীয় প্রশাসনের দাবি, পাহাড়ে শেষ বার আবাসন প্রকল্পের কাজ এক দশক আগে হয়েছিল। গত ২০১১ সালে ইন্দিরা আবাস যোজনার সমীক্ষা হয়। উপভোক্তাদের ঘর তৈরির টাকা দেওয়া শুরু হয়েছিল ২০১৪-১৫ নাগাদ। প্রকল্পের শতাধিক উপভোক্তা নানা কারণে টাকা পাননি। নতুন প্রকল্পের কাজ পাহাড়ে হয়নি। সম্প্রতি ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ)-এর তরফে রাজ্য সরকারের কাছে নতুন আবাস প্রকল্প নিয়ে সমীক্ষা চালু করার আবেদন জানানো হয়েছে। আর প্রশাসনের তরফে পুরনো কাজ সংশোধন করে প্রক্রিয়া শেষ করার পর্ব চলছে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে, কেন্দ্রীয় দলের রিপোর্ট কতটা গ্রহণযোগ্য, তা নবান্ন থেকে জানানো হবে বলে মনে করছেন প্রশাসনিক আধিকারিকেরা।
কেন্দ্রীয় দলের রিপোর্ট নিয়ে দার্জিলিং এবং কালিম্পঙের জেলাশাসকেরা মন্তব্য করেননি। তবে জিটিএ-র চিফ এগজ়িকিউটিভ অনীত থাপা বলেছেন, ‘‘ওই দফতর জিটিএ-র অধীনে নয়। তাই এই নিয়ে আমাদের বলার কিছু নেই। রিপোর্টে কী আছে, তা জানি না।’’ জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের রিপোর্টের চিঠি রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর কাছে এসেছে এবং তাতে উল্লিখিত সাতটি জেলাকে নিশ্চয়ই রাজ্য প্রশাসন থেকে বিষয়টি জানানো হবে। তা দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে ওই কর্তার মন্তব্য, ‘‘পুরনো আবাস প্রকল্পের সঙ্গে নতুন প্রকল্পকে এক করা হল কেন, ধোঁয়াশা আছে।’’
প্রশাসন সূত্রের খবর, ২০১১ সালে দার্জিলিং, কালিম্পং মিলিয়ে তালিকায় ছিলেন ন’হাজারের মতো উপভোক্তা। তাঁদের থেকে বাদ যান তিন হাজার। বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল ছ’হাজারের মতো উপভোক্তাকে। এখনও ১৩৫ জন উপভোক্তা নানা কারণে বিভিন্ন কিস্তির টাকা পাননি। তাঁদের কাজ আটকে রয়েছে। এর মধ্যে দার্জিলিঙের সংখ্যা ৯০ এবং কালিম্পঙের ৪৫। তা হলে নতুন নয়, ২০১১ সালের আবাস যোজনার প্রকল্প নিয়ে কেন এখন রিপোর্ট, প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনিক মহলে৷ দার্জিলিং জেলার সমতল শিলিগুড়ি মহকুমায় নতুন আবাস প্রকল্পে নাম ছিল ৩০ হাজারের মতো। বাদ দেওয়া হয়েছিল প্রায় আট হাজার। এই অর্থ-বছরে বরাদ্দ দেওয়ার কথা ছিল সাত হাজারের বেশি উপভোক্তাকে। এখন সে কাজ চলছে।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় দল দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলায় এসেছিল। দলের সদস্যেরা দার্জিলিং পুর এলাকা, সোনাদা, কালিম্পং-১, পেদং এবং গরুবাথান এলাকায় যান। সমতলের ফাঁসিদেওয়ায় ঘোরেন। পুরনো আবাস প্রকল্প হলেও কেন অনেক ক্ষেত্রে কাজ শেষ হয়নি, তা কেন্দ্রীয় দল পর্যবেক্ষণ করে। প্রশাসনিক কর্তারা জানান, ২০১৪ সালের পরে, পাহাড়ের পরিবেশ পাল্টাতে থাকে। ২০১৭ সালে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার আন্দোলন, ২০২০ সালে করোনা সংক্রমণের জেরে বার বার প্রকল্পের কাজ থমকায়। এখন প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় এক লক্ষ ২০ হাজার টাকা মেলে। দুই জেলার পাহাড়ে নতুন করে সে কাজ শুরু করতে চাইছে ‘জিটিএ’।