Baby Recovered In Matigara

সদ্যোজাতকে আঁস্তাকুড় থেকে কুড়িয়ে ঘুরে বেড়ালেন ভবঘুরে! পুলিশের চেষ্টায় বাঁচল কন্যাসন্তান

হাসপাতালের সামনে সদ্যোজাত কন্যাসন্তানকে ফেলে দিয়ে চলে গিয়েছিলেন কেউ। তাকেই কুড়িয়ে নিয়ে পরম যত্নে নিজের ঝোলায় রেখেছিলেন এক মানসিক ভারসাম্যহীন ভবঘুরে। খবর পেয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করেছে পুলিশ

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:৩৩
Share:

(বাঁ দিকে) শিশুটিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে হাসপাতালে। সেই ভবঘুরে (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।

কেউ অবলীলায় ফেলে দিয়েছিলেন আঁস্তাকুড়ে। কেউ আবার সেই আঁস্তাকুড়ে থেকে জঞ্জাল কুড়োতে গিয়ে মায়ায় আটকে গেলেন। শুক্রবার সকালে এমনই একটি ঘটনা ঘটল মাটিগাড়া শহরে। হাসপাতালের সামনে সদ্যোজাত কন্যাসন্তানকে ফেলে দিয়ে চলে গিয়েছিলেন কেউ। তাকেই কুড়িয়ে নিয়ে পরম যত্নে নিজের ঝোলায় রেখেছিলেন এক মানসিক ভারসাম্যহীন ভবঘুরে। ঝোলা থেকে সমস্ত কিছু ফেলে দিলেও সদ্যোজাতকে ফেলতে চাননি তিনি। শেষে স্থানীয়দের থেকে খবর পেয়ে ভবঘুরের কাছ থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গ্রিন করিডর করে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে। সেখান থেকে পাঠানো হয়েছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে। শিশুটির বাবা-মায়ের খোঁজ চলছে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, মাল্লাগুড়ির হনুমান মন্দিরের সামনে এক ভবঘুরে দাঁড়িয়েছিলেন শুক্রবার সকালে। ঝোলা থেকে সমস্ত জিনিস ফেলতে শুরু করেছিলেন তিনি। তাঁর কর্মকাণ্ড দেখে সন্দেহ হয় স্থানীয়দের। তাঁরা এগিয়ে যান ভবঘুরের কাছে। ভবঘুরে অবশ্য নিজের নাম বলতে পারেননি। ঘরবাড়ি, ঠিকানা জিজ্ঞাসা করায় শূন্যদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন তিনি। তবে ইঙ্গিতে ঝোলাটা দেখিয়ে কিছু বলতে চান ভবঘুরে। সেই ঝোলা খুলতেই চক্ষু চড়কগাছে প্রত্যক্ষদর্শীদের। দেখা যায়, ঝোলায় রয়েছে দুধের শিশু। খবর দেওয়া হয় প্রধাননগর থানার পুলিশের কাছে। তার পর পুলিশ এসে শিশুটিকে উদ্ধার করে।

জানা গিয়েছে, স্থানীয় একটি হাসপাতালের পাশে জঞ্জাল ফেলার জায়গা থেকে শিশুটিকে কুড়িয়ে পেয়েছিলেন ওই ভবঘুরে। শিশুটিকে নিয়ে ইতিউতি ঘুরতে থাকেন তিনি। লোকজনকে দেখে ইতস্তত করেন। শেষে তাঁর ঝোলা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশ। মনে করা হচ্ছে, সদ্যোজাতটি অসুস্থ বলে তাকে ফেলে দিয়েছে পরিবার। কারণ, উদ্ধারের পর তার শারীরিক পরীক্ষা হয় স্থানীয় হাসপাতালে। সেই হাসপাতাল সূত্রে খবর, শিশুটির মাথায় জল জমে আছে। শিশুটির বয়স মাত্র এক দিন!

Advertisement

রোশনি খাতুন নামে এক উদ্ধারকারী বলেন, ‘‘মাল্লাগুড়ি হনুমান মন্দিরের কাছে বাচ্চাটিকে এক ভবঘুরের ব্যাগের মধ্যে পাওয়া যায়। আমরা উদ্ধার করে পুলিশের সঙ্গে তাকে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাই। যে বা যারা এই বাচ্চাটিকে এই ভাবে ফেলে দিয়েছে, তাদের কঠোর শাস্তি দেওয়া উচিত।’’ আর এক প্রত্যক্ষদর্শীর কথায়, ‘‘ওই লোকটির বাড়িঘর নেই। এক কথায় সে ভবঘুরে। কিন্তু বিবেক তারই কাজ করেছে।’’ যদিও তদন্তের স্বার্থে ওই ভবঘুরেকে আটক করেছে পুলিশ। শুরু হয়েছে তদন্ত। শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক এস মণ্ডল বলেন, ‘‘অক্সিজেন দেওয়ার পর বাচ্চাটির পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। গর্ভস্থ থাকাকালীন শিশুটির মাথায় জল জমেছিল। তবে অস্ত্রোপচার করে ওকে বাঁচানো সম্ভব। উন্নত চিকিৎসার জন্যই ওকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement