ক্ষোভ: প্লাস্টিক রুখতে গেলে ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
এ বার খোদ শিলিগুড়ির ডেপুটি মেয়র রামভজন মাহাতোর ওয়ার্ডে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের রমরমার অভিযোগ উঠল।
এই ওয়ার্ডে গুরুঙ্গবস্তি বাজারে বুধবার অভিযান চলে। তখন দেখা যায়, আনাজ, মাছ-মাংসের দোকানে দেদার ব্যবহার চলছে প্লাস্টিক ব্যাগের। অভিযানের সময়ে এদের হাতেনাতে ধরেন পুরসভার আধিকারিক ও কর্মীরা। তার পরে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে জরিমানাও করা হয়। কিন্তু ছোট ব্যবসায়ীরা জরিমানার টাকা দিতে এ দিন অস্বীকার করেন। তাঁদের বক্তব্য, এই পরিমাণ টাকা দিতে গেলে ব্যবসা লাটে উঠবে। উল্টে তাঁরা দু’দিন সময় চেয়ে নেন। তার মধ্যে বাজারে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেন।
আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, শুক্রবার তাঁরা ফের আসবেন। তখন এমন কিছু দেখতে পেলে জরিমানা করা হবে।
শহরকে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ মুক্ত রাখতে বর্তমান পুর কর্তৃপক্ষের সদর্থক ভূমিকা কতটা, তাই নিয়ে আগেই প্রশ্ন উঠেছিল। এ দিনের অভিযানে সেই অভিযোগ আবার সামনে এসে গেল। সব থেকে বড় কথা, যাঁর ওয়ার্ডে অভিযান, সেই ডেপুটি মেয়র নিজেই এই বিষয়ে কিছু জানতেন না। তিনি বলেন, ‘‘এ দিন অভিযান হচ্ছে বলে জানতাম না। তবে ওই বাজারে দেদার প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ব্যবহার হচ্ছে বলে আমাকেও বাসিন্দারা জানিয়েছিলেন।’’
এর আগেও সমস্ত ধরনের প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ শহরে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। শিলিগুড়ি শহর জুড়ে এই নিয়ে সচেতনতা প্রচার হয়েছে। কংগ্রেস পুরবোর্ডে থাকার সময় এবং সুজয় ঘটক পরিবেশ বিভাগের মেয়র পারিষদ থাকার সময় শিলিগুড়ি প্লাস্টিক মুক্ত বলে ঘোষণা করা হয়। কিন্তু সম্প্রতি চোরাপথে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ ফিরে এসেছে বাজারে। লুকিয়েচুরিয়ে অনেক অসাধু ব্যবসায়ী এই ব্যাগ ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ। এ দিন অভিযান চলাকালীন ব্যবসায়ীরা সময় চাইলে, কেন তা দেওয়া হবে তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। সে ক্ষেত্রে অন্যত্র অভিযানের সময় সেখানকার ব্যবসায়ীরাও সময় চাইতে পারেন। পুরসভার পরিবেশ বিভাগের স্যানিটরি ইন্সপেক্টর মৃগাঙ্ক দে বলেন, ‘‘এমন চললে শহরকে পুরোপুরি প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ মুক্ত করা কঠিন কাজ। পুলিশ থাকলেও ব্যবসায়ীরা জরিমানা দিতে চাননি।
গুরুঙ্গবস্তি বাজারের পথিপার্শ্বস্থ ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক বিজয় রায় জানান, তাঁরাও চান না প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ব্যবহার করা হোক। তিনি বলেন, ‘‘আমরা দুই দিন সময় চেয়ে নিয়েছি। ছোট আনাজ ব্যবসায়ীরা ৫০০ টাকা জরিমানা কোথা থেকে দেবেন? আর প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ব্যবহার করবেন না।’’ পুরসভার পরিবেশ বিভাগের মেয়র পারিষদ মুকুল সেনগুপ্ত জানান, আজকে জরিমানা করা হয়েছে। তবে ফিরে আসার ব্যাপার নেই। অভিযান লাগাতার চলবে।