অসচেতন: এমন ভিড় এখনও হচ্ছে এনজেপি স্টেশনে। নিজস্ব চিত্র
তৃতীয় ঢেউয়ের মুখে দাঁড়িয়ে এই প্রশ্নই এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। সচেতন অনেকেই আঙুল তুলছেন হাটেবাজারে মাস্ক ছাড়া লোকজনের ভিড়ের দিকে। তাঁদের অভিযোগ, করোনার প্রথম ঢেউ শুরুর সময়ে পুলিশ যে ভাবে কড়া হাতে চাপ দিতে শুরু করেছিল, সেটা এখন আর দেখা যাচ্ছে না। বরং পুলিশ-প্রশাসনের একটি অংশ অভিযোগের দায় চাপাতে চেষ্টা করছে সাধারণ মানুষের উপরেই। প্রশাসনের সেই অংশের দাবি, মানুষ সচেতন না হলে তা বলপ্রয়োগ করে তা করা সম্ভব নয়।
সচেতন মানুষজনের আশঙ্কা, এই চাপানউতোরে না মূল লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয় প্রশাসন! অথচ উত্তরবঙ্গ থেকেই রাজ্যে করোনার তৃতীয় ঢেউ শুরু হবে বলে আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকরা। তা সামলাতে প্রয়োজন একশো ভাগ কড়াকড়ি। বিশেষ করে বাইরে বার হলে মাস্ক পরতেই হবে। কিন্তু ধরপাকড় বা কড়াকড়ি?
প্রশাসন সূত্রে দাবি, কিছু এলাকায় কড়াকড়ি চলছে। যেমন, আলিপুরদুয়ারে মাস্কহীন পথচারিদের গ্রেফতারের সংখ্যা রোজ গড়ে একশো ছাড়াচ্ছে। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটে ‘মাস্ক আপ’ অভিযান হয়েছে। পথচলতি মানুষকে মাস্ক দেওয়া ছাড়াও গ্রেফতারিও চলছে। উল্টো দিকে, কোচবিহারের ভবানীগঞ্জ বাজার থেকে দেশবন্ধু মার্কেট, রেলগেট বাজারে মানুষের মধ্যে মাস্কের ব্যবহার কম। গ্রামাঞ্চলে আরও ঢিলেঢালা ছবি। কোচবিহারের সদর মহকুমা শাসক রকিবুর রহমান বলেন, ‘‘পুর এলাকায় মাস্কহীনদের আর্থিক জরিমানা আগেই শুরু হয়। এ বার গ্রামাঞ্চলেও হচ্ছে।’’ জলপাইগুড়ির হাটে ক্রেতা-বিক্রেতা বেশিরভাগেরই মুখে মাস্ক নেই। ময়নাগুড়ি, ধূপগুড়ি, মালবাজার জুড়ে বিডিও-র নেতৃত্বে অভিযান চলছে ঠিকই। কিন্তু মাস্ক পরার প্রবণতা কম। এই জেলায় সংক্রমণও তুলনায় বেশি। স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, প্রতিটি বাজারে সর্বক্ষণের নজরদারি ছাড়া সকলকে মাস্ক পরানো সম্ভব নয়। রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ, হেমতাবাদ, ইটাহার, ইসলামপুরের বিভিন্ন এলাকায় মাস্ক না পরার প্রবণতা রয়েছে। রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার সুপার সুমিত কুমার বলেন, ‘‘সংক্রমণ রুখতে বাসিন্দারা সচেতন না হলে পুলিশের পক্ষে অভিযান চালিয়ে সবাইকে মাস্ক পরানো
সম্ভব নয়।’’